২৩ বছর পর নেপাল বাড়ি ফিরলেন ধুনটের নিখোঁজ আমেনা : আনন্দে আত্মহারা সন্তানেরা

ইমরান হোসেন ইমন, অনুসন্ধানবার্তা :
দীর্ঘ ২২ বছর পর বগুড়ার ধুনট উপজেলার নিখোঁজ সেই আমেনা বেগম নেপাল থেকে নিজ বাড়ীতে ফিরেছেন। তবে এখন তার বছর প্রায় ৮০ বছর। ১৯৯৯ সালে অভিমান করে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি।

তার বাড়ি ধুনট নিমগাছি ইউনিয়নের মাজবাড়ি গ্রামে। তার সন্তানেরাও মাকে এতদিন মৃতই জানতেন। তাই তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রেও মৃতই রয়েছেন তাদের মা।

দীর্ঘ ২২ বছর পর বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে নেপাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছান ধুনটে সেই নিখোঁজ গৃহবধু আমেনা খাতুন। আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাকে তার স্বজনদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। তিনি রাতেই সন্তানদের সঙ্গে ধুনটের নিজ বাড়িতে ফিরেছেন।

এদিকে প্রায় দুই যুগ পর মায়ের মুখ দেখে আনন্দে আত্মহারা উঠেছে সন্তান ও স্বজনেরাও।

আমিনা বেগমকে ঢাকা থেকে নিয়ে আসতে গিয়েছিলেন তার বড় ছেলে আমজাদ হোসেন, মেঝো ছেলে ফটিক, ছোট ছেলে ফরাইজুল, মেয়ে আম্বিয়া, নাতি ফাইম, আদিল।

আমিনা বেওয়ার ছেলে ফটিক জানান, ভেবেছিলাম মা মারা গেছে। এতদিন পর মাকে পেলাম। এরচেয়ে এত খুশী আর কি হতে পারে। তিনি জানান, বাংলাদেশ সরকার হাই কমিশনের মাধ্যমে সোমবার দুপুর ১ টায় ঢাকা বিমান বন্দরে নিয়ে আসেন আমার মাকে।

এদিকে বড় বোনের অপক্ষোয় ছিলেন ধুনটের ছোট চাপড়া গ্রামের ছোট বোন আম্বিয়া। তিনি বলেন, আল্লাহ সরকারকে ভালো করুক। সরকারের কারনে এত বছর পর বোনকে ফিরে পেলাম।

নাতি রাজু জানায়, ডিজিটাল বাংলাদেশ না হলে দাদীকে খুজে পেতাম না। ফেইসবুকের সুবাদেই আজ দাদীকে খুজে পেলাম। রাজু আরো জানায়, শুক্রবারেও ভিডিও কলে আমার বাবা ও চাচাদের সঙ্গে সাথে কথা হয় দাদির। সেখানে নেপালী অধিবাসীও ছিল। ভিডিও কলে আশ্রয়দাতা নেপালীদের ধন্যবাদও জানানো হয়।

আমেনার বড় ছেলে আমজাদ হোসেনের স্ত্রী ফাতেমা বেগম বলেন, আমার শাশুড়ী মানষিক রোগী ছিলেন। পাগলের মত ঘুরে বেড়াতো। তাকে পাবনা মানষিক হাসপাতালে ভর্তিও করা হয়েছিল।

ছোট ছেলে ফরাইজুল জানায়, হঠাৎ করেই গত জুন মাসে খবর পাই ‘মা’ বেঁচে আছেন। নেপালের সানসুরি জেলার ইনারুয়া পৌরসভা এলাকায় তার সন্ধান মিলেছে। এরপর ভিডিও কলে মার সঙ্গে নেপাল থেকে ভিডিও কলে কথা হয়।

তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলায় তাকে ইনারুয়ার একটি সেভ হাউজ রাখেন পৌর মেয়র যমুনা পোখরেল। পরবর্তীতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় মাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।