ভূমিহীন সেই আসপিয়াকে জমিসহ বাড়ি ও পুলিশে চাকরি দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, অনুসন্ধানবার্তা, বরিশাল :
জমি ও বাড়ি সহ স্থায়ী কোন ঠিকানা ছিল না আসপিয়া ইসলামের। একারনে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ হলেও ভূমিহীন হওয়ায় নীমিমালা অনুযায়ি চাকরি হচ্ছিল না আসপিয়ার।

বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর সেই আসপিয়া খাতুনকে জমি সহ বাড়ি নির্মানের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগও পেতে যাচ্ছেন বরিশাল জেলা পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পরীক্ষায় মেধা তালিকায় পঞ্চম হওয়া আসপিয়া ইসলাম কাজল (১৯)।

এদিকে নির্দেশনা পেয়ে বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার নিয়োগ প্রত্যাশী আসপিয়ার জন্য ঘর নির্মাণে হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বকুল চন্দ্র কবিরাজকে সরকারি জমি খুঁজতে নির্দেশনাও দিয়েছেন।

বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার এতথ্য নিশ্চিত করে জানান, শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো: তোফাজ্জল হোসেন মিয়া তাকে ফোন করে বলেন, আসপিয়ার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আসপিয়া যাতে কনস্টেবল পদে চাকরি পেতে পারে সেজন্য সরকারি জমিতে ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।’

জেলা প্রশাসক আরও জানান, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পেয়ে আসপিয়ার জন্য জমির স্থান নির্ধারণ করতে ইতিমধ্যেই হিজলা উপজেলার ইউএনও আসপিয়ার জন্য বাড়ি নির্মানের জন্য জায়গা খুঁজছেন।

তবে এব্যাপরে ইউএনও বকুল চন্দ্র কবিরাজ বলেন, ‘আসপিয়ার জন্য ঘর নির্মাণের জন্য খাস জমি নির্ধারন খোঁজা হচ্ছে।

জানাযায়, সরকারি হিজলা ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০২০ সালে এইচএসসি পাস করেছেন আসপিয়া ইসলাম। ১৫ বছর ধরে উপজেলার খুন্না-গোবিন্দপুর গ্রামের একজনের জমিতে আশ্রিত হিসেবে থাকছে তার পরিবার। বাবা সফিকুল ইসলাম মারা গেছেন। পরিবারে মা, তিন বোন ও এক ভাই। ভাই পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। তার আয় দিয়েই চলে সংসার।

গত ১৪, ১৫ ও ১৬ নভেম্বর বরিশাল জেলা জেলা পুলিশ লাইনে কনস্টেবলের শূন্য পদে শারীরিক যোগ্যতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৭ নভেম্বর লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন আসপিয়া ইসলাম। ২৩ নভেম্বর প্রকাশিত লিখিত পরীক্ষার ফলাফলেও উত্তীর্ণ হন। ২৪ নভেম্বর একই স্থানে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধা তালিকায় পঞ্চম হন আসপিয়া।

কিন্তু চুড়ান্ত নিয়োগের আগে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আসপিয়া ও তার পরিবারকে ‘ভূমিহীন’ উল্লেখ করা হয়। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) জেলা পুলিশ সুপার বরাবর প্রতিবেদন জমা দেন হিজলা থানার উপপরিদর্শক মো. আব্বাস।

এর আগে ভূমিহীন হওয়ায় আসপিয়ার চাকরি হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।