কাজিপুরে ইউপি উপ-নির্বাচনের প্রার্থীদের অর্ধেকই এলাকায় বাস করেন না

আবু তৈয়ব সুজয়, স্টাফ রিপোর্টার: অনুসন্ধানবার্তা
কাজিপুর উপজেলার চরাঞ্চলের ৭নং খাসরাজবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যু জনিত কারণে তফশিল অনুযায়ী আগামী ২৫মে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদের মাঝে যেমন উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে, তেমনি নির্বাচনী এলাকায় বসবাস করেন না অথচ চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। এমন নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে ভোটারদের মাঝে। সৎ, যোগ্য, সবসময় জনসাধারণের পাশে থাকেন এবং উন্নয়ন করবেন এমন প্রার্থীকেই নির্বাচিত করবেন বলে ভোটাররা জানিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার ২৭ এপ্রিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন পর্যন্ত ১০ জন চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করেছেন। তারা সবাই নির্বাচনী এলাকার ভোটার হলেও ৫ জন বসবাস করেন অন্য এলাকায়। কালেভদ্রে বা উপলক্ষে তারা গ্রামে আসেন।

তাদের মধ্যে খাসরাজবাড়ী গ্রামের আনোয়ারুল ইসলামের স্ত্রী হালিমা খাতুন চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে অবসরের পর দীর্ঘদিন ধরে বগুড়া জেলার শেরপুরে বসবাস করছেন তিনি।

ইউপির সাবেক চেয়ারম্যানের পুত্র আব্দুল্লাহ আল হাসান রতু সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগ লিমিটেডে কর্মরত থাকায় বগুড়ায় বসবাস করেন। পীরগাছা গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে আয়নাল হক বগুড়া আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। তার বসবাস ও পেশা বগুড়া কেন্দ্রিক।

খাসরাজবাড়ী গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে রফিকুল ইসলাম বগুড়ার শেরপুরে একটি বিদ্যালয়ের বিএসসি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। এছাড়াও যুক্তিগাছা গ্রামের মহির উদ্দিন ব্যাপারীর ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য মতিয়ার রহমান মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন।

রাজবাড়ী গ্রামের নওশের আলীর ছেলে আছের আলী সরকার ও উজান মেওয়াখোলা গ্রামের আয়েন উদ্দিনের ছেলে ছাইফুল ইসলাম গত ইউপি নির্বাচনে সদস্য পদে বিজয়ী হতে পারেননি।

কালিকাপুর গ্রামের আজীজ মুন্সির ছেলে আব্দুস সোবহান ইউপি সদস্য ছিলেন। উজান মেওয়াখোলা গ্রামের কছিম উদ্দিনের ছেলে এবং প্রয়াত চেয়ারম্যানের সহদর জয়নুল আবেদীন চেয়ারম্যান হতে চান। খাসরাজবাড়ী গ্রামের এনামুল হক বিএনপি শাসনামলে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এছাড়াও তিনি কাজিপুর থানা বিএনপির সদস্য ছিলেন। বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।

বিগত কয়েক বছরের ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে আসছেন। এবার দলীয় মনোনয়ন না থাকায় ১০ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এতে করে ভোটাধিকার প্রদানের সুযোগ পেয়ে ভোটারদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে।

‘কেমন চেয়ারম্যান চাই’ এমন প্রশ্নের জবাবে উজান মেওয়াখোলা গ্রামের ভোটার কামরুজ্জামান (৩৫) জানান, সৎ, উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারে এবং এলাকায় বসবাস করে এমন চেয়ারম্যান চান। গোদারবাগ গ্রামের হামিদুল ইসলাম (৪৩) বলেন, বিপদে আপদে কাছে পাই এমন মানুষ চাই।

খাসরাজবাড়ী ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ৮৭০১ জন। এরমধ্যে ৪২০৯ জন পুরুষ এবং ৪৪৯২ জন মহিলা ভোটার রয়েছেন। এই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম গত ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ইং তারিখে মৃত্যু বরণ করায় পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। আগামী ২৫ মে ভোট গ্রহণের দিন ধার্য করেছে নির্বাচন কমিশন।