ধুনটে ইউপি সদস্য রেশমা হত্যা মামলায় ২ জন আটক
বগুড়ার ধুনটে ইউপি সদস্য রেশমা আক্তার হত্যা মামলায় আটককৃত ভ্যান চালক জুয়েল (৩২) ও স্থানীয় মাতব্বর নুরু (৬০)

ইমরান হোসেন ইমন, অনুসন্ধানবার্তা :
বগুড়ার ধুনট উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা সদস্য রেশমা আক্তারকে (৩৮) হত্যার ঘটনায় এক ভ্যান চালক ও এক স্থানীয় মাতব্বরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) গ্রেফতারকৃতদের ধুনট থানা হাজত থেকে বগুড়ার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- মথুরাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত খালেকের ছেলে ভ্যান চালক জুয়েল (৩২) ও একই গ্রামের মৃত চাঁদ মিয়ার ছেলে মাতব্বর নুরু মিয়া (৬০)।

পুলিশ জানায়, পরকীয়া সম্পর্কের জের ধরেই ইউপি সদস্য রেশমা আক্তারকে হত্যা করা হয়। এই কিলিং মিশনে ৫ থেকে ৬ জন ব্যক্তি অংশ নেয়। তাদের মধ্যে আটককৃত জুয়েল তার ভ্যানযোগে লাশ বস্তায় তুলে নিয়ে দূরবর্তী ফসলী জমিতে ফেলে দেয়। আর নরু মন্ডল এই হত্যাকান্ডে সহযোগিতা করেন।

মামলা ও স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, ধুনট উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের অটো ভ্যান চালক ফরিদ উদ্দিনের সঙ্গে গত ২০ বছর পূর্বে সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার ধানগড়া এলাকার আলতাফ হোসেনের মেয়ে রেশমা খাতুনের বিয়ে হয়।

তাদের দাম্পত্য জীবনে ১০ শ্রেণীতে পড়ুয়া এক ছেলে ও ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক মেয়ে রয়েছে। ২০১৬ সালে মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৭,৮,৯নং সংরক্ষিত আসনে নারী ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয় রেশমা আক্তার।

এদিকে ১৮ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করেই নিখোঁজ হয়ে যায় রেশমা খাতুন। কিন্তু এঘটনায় গত ৫ দিনেও ধুনট থানায় কোন জিডি বা অভিযোগ করেনি তার স্বামী বা স্বজনেরা।

নিখোঁজের ৫দিন পর গত ২২ সেপ্টেম্বর স্বামীর বাড়ির অদূরে একই ইউনিয়নের কুঁড়িগাতি গ্রামের বস ইটভাটা নামক স্থানের একটি ধান ক্ষেত থেকে ইউপি সদস্য রেশমা আকতারের গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এঘটনায় নিহতের ছোট ভাই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ধুনট থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে ধুনট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এদিকে মামলা দায়েরের পর এই হত্যাকান্ডের কোন ক্লু খুঁজে পাচ্ছিল না পুলিশ। অবশেষে পরকীয়া সম্পর্কের সূত্র ধরেই পুলিশ এই হত্যাকান্ডের রহস্য খুঁজে পেয়েছে।

এব্যাপারে ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা জানান, রেশমা আক্তারের সঙ্গে খুনির পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। কিন্তু তাদের সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।

এই হত্যাকান্ডে ৫ থেকে ৬ জন অংশ নেয়। তাদের মধ্যে ২ জনকে আটক করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। এছাড়া প্রধান খুনি সহ অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।