ধুনটে বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন

ইমরান হোসেন ইমন, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। সারাদিন-রাত মিলে প্রায় অর্ধেক সময়ই বিদ্যুৎ থাকছে না। একারনে ভোগান্তিতে পড়েছে এই উপজেলার প্রায় ৮৮ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক।

বিদ্যুতের এমন ভেলকিবাজিতে ভেঙ্গে পড়েছে অর্থনৈতিক অবস্থাও। ঈদের ঠিক আগ মুহূর্তে বিদ্যুৎ সংকটের কারনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। এর প্রভাব পড়েছে সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালতেও। দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় প্রচন্ড গরমে হাসপাতালের রোগীরাসহ বাসা বাড়িতে বৃদ্ধ ও শিশুরাও নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

ধুনট বাজারের শমসের আলী খান মার্কেটের ব্যবসায়ী সুমন খন্দকার বলেন, বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। একারনে ঈদের আগে হলেও ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম। দিনের বেলায় বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় মার্কেটের ভিতর অন্ধকার এবং গরমে অতিষ্ঠ হয়ে অনেকেই ফিরে যান। আর এভাবে চলতে থাকলে মহাজনদের দেনা মেটাতেই হিমশিম খেতে হবে। তবে বিদ্যুৎ সংকটে শুধু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে যাওয়া সাধারণ মানুষেরাও।

ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের স্কুল ছাত্র সাব্বির হোসেন জানায়, সে তার জন্ম নিবন্ধন তুলতে পরিষদে গিয়েছিলো সকাল ১০টায়। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় তাকে বিকেলে ৫টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে।

জানাগেছে, ২০১৫ সালের দিকে ধুনট পৌরসভাসহ ১০টি ইউনিয়নে ধুনট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহক সংখ্যা ছিল প্রায় ৪৫ হাজারের মতো। কিন্তু ২০২২ সালের দিকে এই গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে প্রায় ৮৮ হাজারের মতো।

তাই ধুনট উপজেলায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেতে প্রায় ১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। কিন্তু এক মাস আগেও যেখানে এই উপজেলালায় প্রায় ১৫ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ মিলতো, তা এখন কমে দাড়িয়েছে মাত্র ৯ থেকে ১০ মেগাওয়াটে। আর একারনেই এই ধুনট উপজেলায় বিদ্যুৎ সংকট এখন চরমে পৌঁছেছে।

তবে এব্যাপারে ধুনট পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম মাহবুব জিয়া বলেন, ধুনট উপজেলায় প্রায় ১৭ থেকে ১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। কিন্তু জাতীয় গ্রিডে সমস্যা হওয়ায় চাহিদার তুলনায় কম সরবরাহ করায় এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তবে অতি দ্রুত এই সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।