ধুনটে বিধবা নারীর নবজাতক শিশুর মৃতদেহ গর্ত থেকে উদ্ধার, ধর্ষকসহ গ্রেপ্তার ২

স্টাফ রিপোর্টার, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ার ধুনটে এক বিধবা নারীকে ধর্ষণের পর অবৈধ গর্ভপাত ঘটিয়ে নবজাতক শিশুকে মাটিতে পুতে রাখার চারদিন পর পুলিশ ওই শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। এঘটনায় সোমবার ওই বিধবা নারী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে পুলিশ ওই শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেছে।

এঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে মামলার ১নং আসামী ধর্ষক আসাদুল শেখসহ এক পল্লী চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার বগুড়ার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মথুরাপুর ইউনিয়নের হিজুলী গ্রামের গোলজার হোসেনের ছেলে ধর্ষক আসাদুল শেখ (৪০) ও চৌকিবাড়ী ইউনিয়নের রুদ্রবাড়ীয়া গ্রামের মৃত আবুল ফজলের ছেলে পল্লী চিকিৎসক ফরহাদ হোসেন (৫৫)।

মামলা ও স্থানীয়সূত্রে জানাগেছে, হিজুলী পূর্বপাড়া এলাকার জনৈক এক ব্যক্তির মেয়ের (৩৮) সঙ্গে গত ২২ বছর আগে শেরপুর উপজেলার এক ব্যক্তির বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের ৫ বছর পরই মেয়েটিকে তালাক দেয় স্বামী। এরপর মেয়েটি তার ছোট্ট শিশুকে নিয়ে বাবার বাড়িতে বসবাস শুরু করে। এদিকে জীবিকার তাগিদে বিধবার মেয়েটি (২২) বর্তমানে গার্মেন্টেসে চাকুরি করায় সে একাই বসবাস করে আসছিল।

এই সুযোগে প্রতিবেশি হিজুলী গ্রামের গোলজার হোসেনের ছেলে আসাদুল শেখ ওই নারীকে একটি বিধবা ভাতার কার্ড পাইয়ের দেওয়ার কথা বলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। গত ৬ মাস আগে ওই নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে আসাদুল। এতে ওই নারী অন্তসত্তা হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানতে পেরে গত ২০ এপ্রিল ধর্ষক আসাদুল মেয়েটিকে নিয়ে হিজুলী বাজারের পল্লী চিকিৎসক ফরহাদ হোসেন কাছে যান। তখন ফরহাদ হোসেনের দেয়া ঔষধ সেবন করানো হয় মেয়েটিকে।

এর পরদিন ২১ এপ্রিল মেয়েটির গর্ভপাত হলে ধর্ষক আসাদুল ভয়ভীতি দেখিয়ে নবজাতক শিশুকে মাটিতে পুতে রাখতে বলে। তার কথা মতো বিধবা মেয়েটি তার নবজাতক শিশুকে পলিথিনে মুড়িয়ে বাড়ির পাশের অন্যের একটি ঘাসের জমিতে পুতে রাখে। কিন্তু পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি টের পাওয়ায় অসহায় মেয়েটি তার নবজাতকের মৃতদেহ সেই গর্ত থেকে তুলে এনে তার নিজ বাড়িতে পুতে রাখে। পরে পুলিশ সংবাদ পেয়ে শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করে।

এবিষয়ে ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, মেয়েটিকে ভয়ভীতি দেখানোর কারনে ঘটনাটি কাউকে জানাতে পারেনি। পরে আমরা তার নিরাপত্তা সহ বিভিন্ন আইনী বিষয়ে আশ্বস্ত করায় সে নির্ভয়ে মামলা করেছে। মামলা দায়েরের পর পরই ধর্ষক সহ ওই পল্লী চিকিৎসককেও গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।