ধুনটে প্রথম স্বামীর কাছে ফিরতে দ্বিতীয় স্বামীকে খুন!

ইমরান হোসেন ইমন, অনুসন্ধানবার্তা :
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় প্রথম স্বামীর কাছে ফিরে যেতে দ্বিতীয় স্বামীকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে এঘটনার এক মাস পর বিজ্ঞ আদালতের আদেশে শুক্রবার রাতে ধুনট থানায় একটি হত্যা মামলা রেকর্ডভুক্ত করা হয়েছে।

এই হত্যা মামলার বাদী বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার পোয়ালগাছা দৌগাছিপাড়া এলাকার মৃত আমির উদ্দিন আকন্দের ছেলে ছাবেদ আলী আকন্দ।

তিনি মামলার এজাহারে উল্লেখ্য করেছেন, ধুনট উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামের মোশারফ হোসেনের মেয়ে মমতা বেগমের সঙ্গে একই গ্রামের মৃত খোকা মিয়ার ছেলে আল মাহমুদের বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে তিন সন্তান রয়েছে।

কিন্তু এমতাবস্থায় মামলার বাদী ছাবেদ আলীর ভাগিনা শহিদুলের সঙ্গে মোবাইলফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে মমতা বেগম। একপর্যায়ে মমতা ও শহিদুল পালিয়ে বিয়ে করে গত এক বছর ধরে অন্যত্র ঘর সাংসার করে আসছিল। কিন্তু মমতা বেগম প্রায়ই তার বাবার বাড়িতে গেলে তার প্রথম স্বামী আল মাহমুদ তাকে ফিরিয়ে নিতে প্রলোভন দেখাতো।

এতে মমতা বেগম রাজি হয়ে যায় এবং গত ১৪ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে মোবাইলফোনে দ্বিতীয় স্বামী শহীদুলকে ধুনটের তারাকান্দি গ্রামে তার বাবার বাড়িতে ডিকে নিয়ে যায়। এরপর সেখানে প্রথম স্বামী আল মাহমুদ ও মততা বেগম সহ তাদেরকে লোকজন মমতাকে তালাক দেওয়ার জন্য শহিদুলকে চাপ সৃষ্টি করে এবং এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।

কিন্তু এতে রাজি না হওয়ায় মমতা বেগম ও আলমাহমুদ সহ তাদের লোকজন শহিদুলকে বেধরক পিটিয়ে ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। পরদিন ১৫ অক্টোবর সকাল ৯টার দিকে শহিদুলকে পাশ^বর্তী মমতার ফুফু বেদনা বেগমের বাড়িয়ে নিয়ে যায়।

সেখানে নেওয়ার পর আবারও শহিদুলকে পিটিয়ে ঘরের তীরের সাথে গলায় রশি দিয়ে টানিয়ে রাখে। এর কিছুক্ষন পর শহিদুল আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচারনা চালাতে চিকিৎকার দেয় মমতা ও তাদের লোকজন।

পরে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে জীবিত অবস্থায় শহিদুলকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে ৪দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ১৯ অক্টোবর রাত ৩টা ৪০ মিনিটে শহিদুল মারা যায়।

এব্যাপারে ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) জাহিদুল হক জানান, ঘটনার পর কেউই থানায় এবিষয়টি জানায়নি। পরবর্তীতে আদালতের আদেশে ৫জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলাটি রেকর্ডভুক্ত করা হয়েছে। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে। এছাড়া মামলাটি অধিকতর তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।