ধুনটে এসিল্যাড অবরুদ্ধ : ড্রাইভারকে মারধর

ইমরান হোসেন ইমন, অনুসন্ধানবার্তা :
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বালু উত্তোলনের সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে এসিল্যান্ডকে অবরুদ্ধ করে তার ড্রাইভারকে মারধর করেছে বালু উত্তোলনকারীরা।

রবিবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে ধুনট থানা ভবনের প্রায় ১ কিলোমিটার দূরবর্তী ধুনট সদর ইউনিয়নের পাকুরিহাটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় লোকজন জানান, ধুনট সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ রানা পাকুরিহাটা হলহলিয়া খালে ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে বালু উত্তোলন করে আসছিল। রবিবার সন্ধ্যার দিকে ধুনটের এসিল্যান্ড বরকত উল্লাহ ধুনট থানা পুলিশের তিন পুলিশ সদস্যদের নিয়ে অভিযানে আসেন।

এসময় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও ধুনটের এসিল্যান্ড বরকত উল্লাহর নির্দেশনায় তার ড্রাইভার সহ সহকর্মীরা বালু উত্তোলনের ড্রেজার মেশিন ধ্বংস করতে থাকেন। সেই সময় বালু উত্তোলনকারীরা এসিল্যান্ড সহ সবাইকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এপর্যায়ে এসিল্যান্ডের ড্রাইভারকে মারধরও করে বালু উত্তালনকারীরা। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে এসিল্যাড সহ সবাই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

তবে এব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও ধুনট উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরকত উল্লাহ বলেন, ধুনট সদরের সরকারি হলহলিয়া খালে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়।

এসময় বালু উত্তোলনকারীরা আমাদেরকে ঘিরে ধরেন। একপর্যায়ে তারা আমার ভ্রাইভার মোমিনকের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে।

পরে পুলিশের সহযোগিতায় আমারা সেখান থেকে চলে আসি। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারি, ধুনট সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ রানা সরকারি এই খালে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে নাকি, পাশ্ববর্তী স্কুল ভরাট করছে। তবে এসব ব্যাপারে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

তবে এ ব্যাপারে ধুনট সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এসএম মাসুদ রানা বলেন, পাকুরিহাটা গ্রামের এক ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত জমি থেকে বালু তুলে পাশ্ববর্তী স্কুল ভরাট করে দিচ্ছে। একাজে গ্রামবাসী সকলে সহযোগিতা করছে। তাই সেখানে অকারনে অভিযান পরিচালনা করায় গ্রামবাসী ক্ষিপ্ত হয়েছিল।

তবে সেখানে কোন অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, যমুনা নদী সহ বিভিন্ন নদী থেকে প্রতিদিন অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকার বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। অথচ সরকারী স্কুল ভরাটের কাজে বাধা দেয়া হচ্ছে। তবে এই ঘটনার সময় তিনি বগুড়ায় অবস্থান করছিলেন বলেও দাবি করেন মাসুদ রানা।

এব্যাপারে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত কলেন, মাঝে মধ্যেই ধুনট উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে অভিযান পরিচালনা করে অসংখ্য ব্যক্তিকে জেল জরিমানা করা হয়েছে এবং আগামীতে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে বাধাগ্রস্থ করা হলে এব্যাপারে প্রয়োজনীয় নেয়া হবে।

ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, ঘটনাটি কিছুটা শুনেনি। তবে বিস্তারিত কেউ জানায়নি। তারপরও কোন অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।