বগুড়ায় দরপত্র চুরির দায়ে ইউপি চেয়ারম্যান বহিষ্কার

বগুড়া প্রতিনিধি: অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ায় হাট-বাজারের ইজারা দরপত্র চুরির অভিযোগে শাহজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামানকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সাথে কেন তাকে স্থায়ী ভাবে বহিষ্কার করা হবে না মর্মে কারণ দর্শণোর নোটিশও প্রেরণ করা হয়।

শুক্রবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইদা খানম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। সাইদা খানম জানান, গত ১৬ এপ্রিল পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউনিয়ন পরিষদ-১ শাখা থেকে সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধানের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে উপজেলার হাটবাজার সমুহের ১৪৩০ বঙ্গাব্দে ইজারা প্রদানের জন্য প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে দরপত্র দাখিল ও উন্মুক্তকরণের সময় উপজেলার জামাদারপুকুর হাটের একটি দরপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে গোপনে চুরি করে বাহিরে পাঠিয়ে দেওয়ায় বগুড়া জেলা প্রশাসককে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়।

যেহেতু মনুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে উল্লেখিত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার দ্বারা ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষমতা প্রয়োগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন নয় মর্মে সরকার মনে করে। সেহেতু ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামানের এই অপরাধমূলক কার্যক্রম ইউনিয়ন পরিষদসহ জনস্বার্থের পরিপন্থী বিবেচনায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইনে অপরাধ করায় তাকে ইউনিয়ন পরিষদের স্বীয় পদ থেকে সাময়িক ভাবে বহিস্কার করা হয়েছে।

এছাড়া একই তারিখে অপর একটি নোটিশে কেন তাকে চুড়ান্ত ভাবে অপসারণ করা হবে না তার জবাব চেয়ে পত্র প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে বগুড়া জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই আদেশের অনুলিপি হাতে পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন ইউএনও সাইদা খানম।

উল্লেখ্য, গত ২ মার্চ উপজেলা অডিটোরিয়ামে হাটবাজার সমুহের ১৪৩০ বঙ্গাব্দের ইজারা প্রদানের জন্য প্রথম পর্যায়ের দরপত্র দাখিল ও উন্মুক্তকরণের সময় মাঝিড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান জামাদারপুকুর হাটের দরপত্র গোপনে চুরি করে বাহিরে পাঠিয়ে দেন।

উপজেলার খরনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান শাহীনকে জামাদারপুকুর হাট পাইয়ে দিতে অপর দরপত্র দাতা জেলা যুবলীগ নেতা আলহাজ্ব শেখকে ম্যানেজ করতে না পেরে তার দরপত্র গায়েব করা হয়। সবার সামনে দরপত্র চুরির বিষয়টি প্রকাশ হলে ইউএনও সাইদা খানম ইউপি চেয়ারম্যানকে আটকে রেখে দ্রুত দরপত্রটি ফেরত দিতে চাপ প্রয়োগ করেন।

চাপের মুখে নুরুজ্জামান মোবাইল ফোনে তার সহযোগীদের দরপত্র ফেরত দিতে বললে তারা কৌশলে জেলা যুবলীগ নেতা আলহাজ্ব শেখের দরপত্র জমা না দিয়ে কাহালু উপজেলা চেয়ারম্যান হাসিবুল হাসান সুরুজের নামে একটি দরপত্র জমা দেন।

এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসের কম্পিউটার অপারেটর মোজাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা নুরুজ্জামানকে এজাহারভুক্ত আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। এ বিষয়ে মাঝিড়া ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামানের সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।