বগুড়ায় বন্ধুর স্ত্রীর গোসলের ভিডিও ধারণ করে অর্থ আদায়, যুবকের ১৩ বছর কারাদণ্ড

অনুসন্ধানবার্তা ডেস্ক:
বগুড়ায় বাথরুমের ভিতর গোপন ক্যামেরা লাগিয়ে বন্ধুর স্ত্রীর গোসলের ভিডিও ধারণ করে অর্থ আদায়ের অভিযোগে আরিফুর রহমান ওরফে আরিফ (৩৮) নামে এক যুবককে ১৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (০১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহীর বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো: জিয়াউর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আরিফুর রহমান বগুড়া জেলা সদরের উপশহর হাউজিং এস্টেট এলাকার মৃত দেওয়ান আক্তারের ছেলে।

এছাড়া একই সঙ্গে ওই যুবককে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো আরও ১৮ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের অদেশ দেওয়া হয়েছে। জরিমানার টাকা আদায় করে তা ভিকটিমকে দেওয়ার নির্দেশনাও দেন আদালত। তবে মামলার দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি আরিফুর রহমান পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় জামিন পাওয়ার পর থেকেই তিনি পলাতক রয়েছে। তার অনুপস্থিতেই রায় ঘোষণা করা হয়।

রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ইসমত আরা বেগম এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ২০২১ সালের ২ মে বগুড়ার উপশহর পদ্মা ভবন এলাকার বাসিন্দা শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় এই মামলাটি দায়ের করেছিলেন।

মামলার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, আসামি আরিফ বাদীর বন্ধু। বন্ধুত্বের সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে বাসায় যাতায়াত ছিল আরিফের। কোনো এক সময় আরিফ তার বন্ধুর বাড়ির বাথরুমে গোপন ক্যামেরা লাগিয়ে তার স্ত্রীর গোসলের ভিডিও গোপন ধারণ করে।

আরো পড়ুন- মাদকাসক্ত জামাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

এরপর বাদীর স্ত্রীর ফেসবুক আইডির মেসেঞ্জারে তা পাঠিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। বাদীর স্ত্রী লোকলজ্জার ভয়ে তার এক আত্মীয়কে টাকা দেওয়ার নাম করে আরিফকে ৫ লাখ টাকা প্রদান করেন। কিন্তু এরপর বাদীর স্ত্রীর কাছে আবারও ৫ লাখ টাকা দাবি করেন আরিফ। তখন মেয়েটি তার স্বামীকে ঘটনাটি খুলে বলেন।

এদিকে বিষয়টি বাদী জানার পর আসামি আরিফকে তার মুঠোফোন, ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপ সহ সকল যোগাযোগ মাধমে ব্লক করে দেন। কিন্তু ২০২১ সালের ২৬ মার্চ আরিফ আরেকটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে বাদীকে ফোন করে আবারো ৫ লাখ টাকা দাবি করেন এবং ধারণকৃত ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখান।

পরে তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরিফের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় মামলা করেন। পরে তাকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এ রায় ঘোষণা করা হয়।

অনুসন্ধানবার্তা -ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন-