বগুড়ায় হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ায় শাহজাহান হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদেরকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।

দীর্ঘ ১৯ বছর পর সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক হাবিবা মণ্ডল এই রায় ঘোষণা করেন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো- বগুড়া সদর উপজেলার শেখেরকোলা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও বিএনপির সভাপতি রশিদুল ইসলাম ওরফে রশিদ মৃধা, বিপ্লব মিয়া, রাসেল মিয়া, জুয়েল প্রামানিক, সবুজ আকন্দ, উজ্জ্বল আকন্দ, আব্দুল মান্নান, পিলু খন্দকার, মোখলেছার রহমান মুকুল, আব্দুল হামিদ খোকা আকন্দ এবং জাহেদুর রহমান।

আসামীদের মধ্যে বিপ্লব, রাসেল ও জুয়েল পলাতক থাকায় রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।

আরো পড়ুন- কাজিপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন

মামলাসূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি শেখেরকোলা ইউপিতে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ভোটে আব্দুস সাত্তার খা এবং রশিদুল ইসলাম ওরফে রশিদ মৃধা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এতে রশিদ মৃধা জয়লাভ করে ১১ ফেব্রুয়ারি তার দলীয় কর্মীদের নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বিভিন্ন স্থানে ভোটারদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন।

পথিমধ্যে শেখেরকোলা ইউনিয়নের দক্ষিণভাগ এলাকার মৃত তমিজ উদ্দিনের ছেলে শাহজাহান ও একই এলাকার আব্দুল মান্নানের সাথে রশিদ মৃধার দেখা হয়। তখন রশিদ মৃধা ভোট না দেয়ার অভিযোগ তুলে শাহজাহানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দিতে থাকে। রশিদ মৃধার এমন হুমকি পেয়ে তার সহযোগীরা লোহার রড ও লাঠি দিয়ে শাহজাহানের উপর আক্রমণ করে।

একপর্যায়ে তারা শাহজাহানের মাথায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে এলোপাথাড়ি আঘাত করে। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে শাহজাহান মারা যান। পরে ওইদিনই রশিদ মৃধাকে প্রধান আসামিকে ১১জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই মাহমুদুর রহমান।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর নাছিমুল করিম হলি জানান, এই মামলায় আদালত ১১ জনের সাক্ষ্য নেন। সাক্ষ্য ও তথ্যের ভিত্তিতে আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাদেরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন।