বগুড়া পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীর নাক ফাটালো প্রধান শিক্ষক : প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

স্টাফ রিপোর্টার, অনুসন্ধানবার্তা :
বগুড়া মাটিডালি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাল মিয়ার বিরুদ্ধে পৌরসভার এক পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে মারপিট করে নাক ফাটানোর অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার ওই বিদ্যালয়ের সামনে ময়লা ফেলার বেলচা দিয়ে আঘাত করলে রামু হরিজন নামে স্থানীয় পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীর নাকের হাড় ভেঙ্গে যায়।

পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এঘটনায় রামু হরিজনের বাবা জীবন চন্দ্র হরিজন বাদী হয়ে মাটিডালি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাল মিয়ার বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এদিকে মঙ্গলবার বিকালে এই ঘটনায় বিক্ষুব্ধ বগুড়া কটনমিল এলাকায় অবস্থিত হরিজন পল্লীর বাসিন্দারা তাদের বাড়ি-ঘরের সামনে বগুড়া-মাটিডালি সড়ক অবরোধ করে।

পরে তারা অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক লাল মিয়াকে গ্রেফতারের দাবিতে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বগুড়া সদর থানার সামনে বিক্ষোভ করে।

এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বিক্ষোভকারীদের এজাহার দাখিলের পরামর্শ দিয়ে বলা হয়, অভিযোগ পেলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে পুলিশের পক্ষ থেকে আইনী সহায়তার আশ্বাস পেয়ে আহত রামু হরিজনের বাবা জীবন চন্দ্র হরিজন বাদী হয়ে মাটিডালি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাল মিয়ার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

হরিজন পল্লীর বাসিন্দা জীবন চন্দ্র হরিজন জানান, তার ছেলে রামু হরিজন পৌরসভার একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী। সে মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ১৭নং ওয়ার্ডভুক্ত মাটিডালি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ময়লা পরিস্কারের কাজ করছিল।

এ সময় ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাল মিয়া রামুকে দ্রুত ময়লা পরিস্কারের কাজ শেষ করার জন্য নির্দেশ দেন। কিন্তু ততক্ষণে ময়লা সংগ্রহের ভ্যানটি আবর্জনায় পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় রামু বিষয়টি প্রধান শিক্ষককে জানায়, ভ্যানের ময়লাগুলো অপসারণ করার পর উচ্চ বিদ্যালয়ের ময়লাগুলো সংগ্রহ করা হবে।

কিন্তু রামু ওই কথা বলার পর পরই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাল মিয়া সেখানে থাকা ময়লা পরিস্কারের বেলচা দিয়ে তার মাথা লক্ষ্য করে আঘাত করে। তবে সেটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে তার ছেলের নাক লাগে। এতে সে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে যায়। পরে তার সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়।

তিনি আরো জানান, বেলচার আঘাতে তার ছেলে রামুর নাকের হাড় ভেঙ্গে যওয়ায় অন্তত ১০টি সেলাই দিতে হয়েছে।

তবে এব্যাপারে মাটিডালি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাল মিয়া বলেন, তার স্কুলে মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের পরিদর্শনে আসার কথা। তাই বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে কিছু ময়লা জরুরী ভিত্তিতে অপসারণের জন্য রামুকে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু রামু তা না শোনায় তিনি নিজেই ময়লাগুলো অপসারনের জন্য বেলচা নিতে চাইলে রামু তাতে বাধা দেয়। বেলচা নিয়ে টানাটানির এক পর্যায়ে সে আঘাত পায় বলে তিনি দাবি করেন।
এবিষয়ে বগুড়া সদর থানার এসআই মঞ্জুরুল হক ভুইয়া জানান, এঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।