ধুনটে নিষিদ্ধ চায়না জালের প্রভাবে কদর কমেছে বাঁশের তৈরী দাড়কির

ইমরান হোসেন ইমন, অনুসন্ধানবার্তা :
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ব্যাপকভাবে বেড়েছে নিষিদ্ধ চায়না জালের ব্যবহার। এই জাল ব্যবহারের কারনে দেশীয় জাতের বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছ সহ পোনা মাছ এখন বিলুপ্তির পথে।

বিগত দিনের বর্ষাকালে বাঁশের তৈরী দাড়কির কদর থাকলেও এখন চায়না জালের অবৈধ ব্যবহারে হারিয়ে যেতে বসেছে দাড়কি দিয়ে মাছ ধরার সেই ঐতিহ্য। সেই সঙ্গে কর্ম হারিয়ে পথে বসে যাচ্ছেন এই পেশার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কারিগররাও।

মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) ধুনট সদরের সাপ্তাহিক হাটে দেখা যায়, নাটাবাড়ি গ্রামের ভজন চন্দ্র, চৌকিবাড়ী গ্রামের কার্তিক চন্দ্র ও হাসুখালি গ্রামের নারায়ন চন্দ্র সহ বেশ কয়েকজন বাঁশের তৈরী দাড়কি নিয়ে বসে আছেন ক্রেতার অপেক্ষায়। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেও মেলেনি কাঙ্খিত ক্রেতার দেখা।
দাড়কি

নাটাবাড়ি গ্রামের দাড়কি বিক্রেতা ভজন চন্দ্র জানান, প্রতি জোড়া দাড়কি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব দাড়কি চৌকিবাড়ী ইউনিয়নের পেঁচিবাড়ি গ্রাম থেকে কিনে এনেছেন তিনি। কিন্তু সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একটাও দাড়কি বিক্রি করেন পারেনি তিনি।

হাসুখালি গ্রামের নারায়ন চন্দ জানান, আগের দিনে ২০/২৫টি দাড়কি হাটে তোলার সঙ্গে সঙ্গেই বিক্রি হয়ে যেতো। কিন্তু এখন চায়না জাল ব্যবহারের কারনে দাড়কি বিক্রি অনেকটাই কমে গেছে। একারনে কর্ম ও পুঁজি হারিয়ে পথে বসেছে এই বাঁশ শিল্পের সঙ্গে জড়িত শতাধিক কারিগর।

চৌকিবাড়ী গ্রামের কার্তিক চন্দ্র জানান, চায়না জাল দিয়ে মাছ ধরার কারনে মা মাছ সহ পোনা মাছ শিকারের ফলে এখন বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে দেশীয় জাতের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। তবে বাঁশের তৈরী দাড়কি দিয়ে মাছ ধরলে শুধু উপযুক্ত মাছই ধরা পড়বে। এতে অন্য কোন মাছের ক্ষতি হবে না।

কিন্তু চায়না জালে বেশি মাছ ধরা পড়ায় সেই জালই ব্যবহার করছে সবাই। তবে এব্যাপারে প্রশাসন কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় নিষিদ্ধ এই চায়না জালের ব্যবহার বেড়েছে। প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে এই নিষিদ্ধ চায়না জাল।
Chaina Jal

এব্যাপারে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, মৎস্য অফিসের কর্মকর্তাদের এসব বিষয় মনিটরিং করার কথা। তারপরও বিষয়টি খোঁজ নিয়ে নিষিদ্ধ চায়না জাল ব্যবহারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।