বগুড়ার শেরপুরে ভূমিহীনদের ঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: অনুসন্ধানবার্তা
বগুড়ার শেরপুরে ভূমিহীনদের জন্য আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন ঘরে নিম্নমানের উপকরণ ও নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার এবং নিয়ম বহির্ভূতভাবে ঘর তৈরির অভিযোগ উঠেছে। তবে নির্মাণকাজে স্থানীয় প্রশাসনের সঠিক তদারকি না থাকায় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উন্নয়ন প্রকল্প ভেস্তে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন সচেতনমহল।

আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ১০ ইউনিয়নের মোট ১৭১ টি ঘর নির্মান করার কথা রয়েছে। তবে বর্তমানে ৯১টি ঘর নির্মানের কাজ চলমান রয়েছে বলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। প্রতিটি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের আবাসনের জন্য দুই শতাংশ জমিসহ ঘর নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। নকশা অনুযায়ী সাড়ে ১৯ ফুট ও ২২ ফুট আট ইঞ্চি সাইজের দুই রুম বিশিষ্ট মুল ঘরের সাথে বারান্দা, রান্নাঘর ও টয়লেট থাকছে। এর জন্য ২ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা ছাড়াও মালামাল পরিবহনের জন্য আরো অতিরিক্ত ৫ হাজার টাকা বরাদ্দ রয়েছে।

সরেজমিন শেরপুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের আয়রা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, এই স্থানে ৩০টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের আবাসনের জন্য ঘরগুলোর নির্মাণ কাজ চলছে। কাজের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি ঘরের নিচে তিন ইঞ্চি সিসি ঢালাই দেয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও সেক্ষেত্রে দেয়া হচ্ছে বালু ও ঢালাই সহ দুই ইঞ্চি। তাছাড়া ঘর নির্মাণকাজে নিম্নমানের ইটের খোয়া ও সিমেন্ট বালির পরিমাণ সমন্বয় না করে বালির ভাগ বেশী দেয়ার অভিযোগ তুলছে স্থানীয়রা। এতে নির্মাণাধীন ঘরগুলোর স্থায়ীত্ব ও টেকশই নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। তবে ওই এলাকার নির্মাণাধীন ঘরগুলোর কাজ প্রায় ৪০ শতাংশ হয়ে গেছে।

অনুসন্ধানে জানাগেছে, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ৯নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই প্রকল্পে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সভাপতি, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি), উপজেলা প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সদস্য এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সদস্য সচিব হিসাবে দায়িত্বে রয়েছেন।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, এ উপজেলায় প্রতিটি গৃহ নির্মাণে প্রকল্পকাজগুলো ইউএনও তার মনোনীত ব্যক্তির মাধ্যমে ইট-বালি-সিমেন্ট ক্রয়সহ একক তদারকি করছেন। সেক্ষেত্রে কমিটি শুধু অনুমোদন দিয়েছেন।

এবিষয়ে মির্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বলেন, এটা আমার দেখার এখতিয়ারের মধ্যে পড়েনা, তবে বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশল অফিস দেখছে।

এবিষয়ে শেরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শামছুন্নাহার শিউলী জানান, ‘ওই প্রকল্পেরকাজগুলো আমি দেখিনি, তবে ৩ ইঞ্চি সিসি ঢালাই করার কথা।’

তবে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সানজিদা সুলতানা বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি এবং তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।