কাজিপুরে যমুনা নদীর তীর সংরক্ষন প্রকল্পের ৮০ মিটার অংশ ধ্বসে বিলীন

শাহজাহান আলী, কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:
তিনদিনের ব্যবধানে যমুনা নদীর তীর সংরক্ষন প্রকল্পের সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার মাইজবাড়ী ইউনিয়নের ঢেকুরিয়া-বিলচতল বেলমাউথ (জিরোপয়েন্টে) এলাকার ৮০ মিটার অংশ বিলীন হয়েছে।

রবিবার (১৭ অক্টোবর) ভোর রাতের কোন এক সময় বেলমাউথ থেকে ভাটিতে দুই স্থানের প্রায় ৮০ মিটার ধ্বসে গেছে। ফলে রাতেই নদীন তীর ঘেষে বসবাসরত প্রায় ১০টি বাড়ি এবং তিনটি দোকান সরিয়ে নিয়েছে।

রবিবার দুপুরে তীর সংরক্ষণ কাজের ধসে যাওয়া স্থানে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, যমুনার পানি কমতে কমতে জিরো পয়েন্টের উজানে নদীর প্রশস্ততা কমে এসেছে প্রায় ৩শ মিটারে। পূর্ব অংশে বিশাল চর জেগে উঠেছে। ফলে ডানতীর সংরক্ষণ কাজের পাশ ঘেষে দেখা দিয়েছে প্রচন্ড স্রোত। আর স্রোতের কারণে পানিতে সৃষ্ট ঘূর্ণাবর্তের ফলে তীর সংরক্ষণ কাজের জিওব্যাগ ও বোল্ডারের নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে ধস নামছে।

ধসে যাওয়া স্থানের মধ্যে ওয়াপদা বাধের ঢালের বাসিন্দারা জিজ্ঞাসাবাদে জানান, রবিবার ভোর রাতে প্রচন্ড শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায়। বাইরে গিয়ে দেখি বোল্ডার ধ্বসে পানিতে চলে যাচ্ছে। তখন চিৎকার করে লোকজন জড়ো করে তিনটি ঘর ও নদীর কিনারে থাকা টং দোকান সকলে মিলে সরিয়ে ফেলি। আশপাশের ৮টি বাড়িও সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

এদিকে খবর পেয়ে রবিবার সকাল থেকে প্রায় এক হাজার জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চলছে বলে জানান সিরাজগঞ্জ পাউবো’র উপসহকারি প্রকৌশলী হায়দার আলী।

তিনি জানান, সামনে চর জেগে ওঠায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গন ঠেকাতে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় ২০১১-১২ অর্থ বছর থেকে কাজ শুরু হয়। শেষ হয়েছে ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে। নদীর তীর স্লোপ করে তার ওপর জিও চট বিছিয়ে সিসি ব্লক প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে এই কাজ শেষ করা হয়।

প্রায় একমাস যাবৎ নদীর পানি কমতে কমতে অনেক স্থানে নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে। অথচ এই অবস্থায় জিরোপয়েন্ট অংশে প্রবল স্রোত ঘুর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়ে তীরে আঘাত হানায় প্রকল্প এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। এছাড়া উজানে পূর্বপাশের চর কেটে অপসারনের মাধ্যমে ভাঙ্গন ঠেকানো যাবে বলে উল্লেখ করেন পাউবো’র উপসহকারি প্রকৌশলী হায়দার আলী।