ধুনটের যমুনা পাড়ে ঈদ আনন্দ: পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি স্থানীয়দের
করোনাকালে দুুটি বছর ঈদে ঘুরতে পারেনি ভ্রমণপ্রিয় মানুষগুলো। তবে এ বছর করোনার প্রদুর্ভাব কমে আসায় এ যেন ভঙ্গা স্রোতের মতো মানুষের ঢল নেমেছে যমুনার পাড়ে। ছবিটি বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের বানিয়াজান স্পার এলাকা থেকে তোলা হয়েছে। -অনুসন্ধানবার্তা

ইমরান হোসেন ইমন, অনুসন্ধানবার্তা:
যমুনার পাড়ে এ যেন বাঁধ ভঙ্গা স্রোতের মতো মানুষের ঢল নেমেছে। করোনাকালে দুুটি বছর ঈদে ঘুরতে না পারা মানুষগুলো এবার মনের আনন্দে সময় কাটাচ্ছে বগুড়ার ধুনট উপজেলার যমুনা নদীর পাড়ে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের শহড়াবাড়ী ও বানিয়াজান যমুনা নদীর স্পারে হাজারো মানুষের ঢল। বন্ধু-বান্ধব, পরিবার পরিজন নিয়ে বসে আড্ডা দিচ্ছেন, কেউ নদীর কিনারে হাঁটছে, কেউবা নৌকায় চড়ে যমুনা নদীতে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

লোকজনের সমাগমে যমুনার তীরে দোকান বসিয়েছে দোকানীরা। ছোট বড় সব বয়সী মানুষের কোলাহলে যমুনার পাড় মুখরিত হয়ে উঠেছে। প্রতি বছরই ঈদে সময় কাটাতে যমুনার পাড় মুখরিত হয়ে উঠতো। কিন্তু গত দুই বছর করোনার করানে ঈদে ঘুরতে পারেনি ভ্রমণপ্রিয় মানুষগুলো। তাইতো এবার যেন বাধন খুলে ছুটে এসেছে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে এই যমুনার পাড়ে। বগুড়াসহ দূর দূরান্ত থেকে আসা ভ্রমণপ্রিয় মানুষগুলোর মিলনমেলায় পরিনত হয় ধুনটে শহড়াবাড়ি ও বানিায়াজান এলাকার যমুনার পাড়।

বগুড়া শহর থেকে ধুনটের বানিয়াজান স্পারে ঘুরতে আসা আশিক-মিথিলা দম্পত্তি বলেন, শহরে বিনোদনের তেমন কিছু নেই। যমুনার তীরে ঘুরতে আসলে মনটা অনেক ভাল লাগে। তাই পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। এখানে ঘুরতে আসলে মনে হয় কক্সবাজারে ঘুরতে এসেছি।

ধুনটের বানিয়াজান যমুনা নদীর পাড়ের ভ্রাম্যমান দোকানী জুয়েল রানা জানায়, এর আগে ঈদের দিন থেকে ৩/৪দিন খুব ভালো বিক্রি করতাম। কিন্তু গত দুই বছর করোনার কারনে লোকজন খুবই কম এসেছে। এবার আশা করছি অনেক বেশী বিক্রি করবো।

শহড়াবাড়ি স্পারের নৌকা চালক এনামুল জানায়, এবারের ঈদে যমুনা নদীতে অনেক লোকজন ঘুরতে এসেছে। ২০ মিনিট নদীতে ঘুরে বেড়ানোর জন্য জনপ্রতি ২০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। দুপুর থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এভাবেই নৌকা চালাচ্ছেন তিনি।

ধুনটের শহড়াবাড়ী গ্রামের আমজাদ হোসেন বলেন, ঈদ ছাড়াও প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে হাজারো মানুষ যমুনা নদীতে ঘুরতে আসেন। তাই এই এলাকাটি পর্যটনখাতেও অথনৈতিকভাবে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে। তাই এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন স্থায়ীভাবে বন্ধ করে পর্যটকদের যাতায়াত সুবিধা নিশ্চিত করতে যমুনার তীর পর্যন্ত সড়ক নির্মান করা জরুরী। তিনি বলেন, এই এলাকায় পর্যটকরা আসলে যমুনার ভাঙ্গন কবলিত অসংখ্য পরিবারের জীবনমান উন্নয়ন ত্বরান্নিত হবে। তাই পর্যটকসহ স্থানীয়রা এই যমুনা নদীকে ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি জানিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন ধরেই।

তবে যমুনার পাড়ে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা আদৌ সম্ভব হবে কিনা এবিষয়ে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, যমুনার পাড়ে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠলে অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি হবে। তাই যমুনায় ভ্রমণপ্রিয় মানুষের বিনোদনের জন্য পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে স্থানীয় এমপি হাবিবর রহমানের সহযোগিতায় সরকারের কাছে একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হবে।