ইমরান হোসেন ইমন, অনুসন্ধানবার্তা :
রংঙ্গীন ঘরে নুতন করে বসবাস করার বাসনায় বিভোর থাকলেও সেই স্বপ্ন মিশে গেছে তাদের। বসবাস শুরুর আগেই বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় ভেঙে পড়েছে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের দুর্যোগসহনীয় বাড়ি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বগুড়ার শেরপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের বুড়িগাড়ি খালের কিনারায় ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২২টি আশ্রয়ন প্রকল্পের আধাপাকা বাড়ি নির্মাণ করা হয়। প্রায় ৩০ ফুট গভীর খালের কিনারা ঘেষে এসব বাড়ি তৈরি করায় বৃষ্টিতে এক পাশের মাটি খালের পানিতে ধসে গেছে।
এতে ভূমিহীনদের জন্য হাতে নেওয়া প্রকল্পের ২২ টি বাড়ির ১০টিই ভেঙে পড়েছে। অন্য ঘরগুলোর দেয়ালেও ফাটল ধরায় সেগুলোও যেকোন সময় ভেঙে পড়তে পারে। এখন খালের ধারে বাঁশের পাইলিং দিয়ে মাটি ধ্বস রোধের চেষ্টা চলছে। তবে ঘর ভেঙে পড়ার দায় নিচ্ছেন না প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কেউই।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে অতিদরিদ্র ভূমিহীনদের জন্য বগুড়ার খানপুরে এসব আধাপাকা বাড়ি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সুফল ভোগীদের হাতে বাড়ির দলিল ও চাবি হস্তান্তরের দুই মাস যেতে না যেতেই ধ্বসে পড়েছে ভূমিহীনদের জন্য সদ্য নির্মিত এসব বাড়ি।
তবে শুধু বর্ষার বৃষ্টিতে ঘর ভেঙে পড়া নয়, দেয়া হয়নি এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ। বিশুদ্ধ খাবার পানির সঙ্কটও রয়েছে। পুরো আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২২টি পরিবারের জন্য মাত্র একটি হস্তচালিত নলকূপ চালু রয়েছে। সবমিলিয়ে এখানে বিরাজ করছে ভুতুড়ে পরিবেশ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তড়িঘড়ি করে খালের কিনারায় ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। আর খরচ বাঁচাতে খালের মাটি কেটেই বাড়ির চারপাশে দেয়া হয়েছে। তাই অল্প বৃষ্টিতেই ভূমিহীনদের বাড়ির মাটি খালে ধসে যাওয়ায় ঘরগুলোর এই হাল হয়েছে।
তবে সংবাদ মাধ্যমে বিষয়টি প্রচার হওয়ায় বর্তমানে খালটিতে বাঁশের পাইলিং করে বাড়িগুলো রক্ষার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু বারবার মাটি ধসে খালে পড়ায় তা সম্ভব হচ্ছে না।
তবে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে খানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম রঞ্জু উত্তেজিত হয়ে উঠেন।
আর এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দাবী, তিনি নতুন যোগদান করায় সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের দায়ভার তাঁর নয়।
শেরপুরের খান পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম রঞ্জু, বলেন, ওই আশ্রয়ন প্রকল্পের কোন ঘর ভেঙ্গে পড়েনি।
এবিষয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ময়নুল ইসলাম জানান, খালের ধারে ঘর নির্মান করায় বৃষ্টিতে ধসে গেছে। মাটি ভরাট করে বাস যোগ্য করার কাজ চলছে। অল্প দিনের মধ্যেই মেরামত করা সম্ভব হবে। ধসে যাওয়ার পর জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী কাজ চলছে।
তবে ওই সকল ঘর নির্মানের সময় নির্বাহী কর্মকর্তা লিয়াকত আলী সার্বক্ষনিক উপস্থিত ছিলেন বলে জানান তিনি।