জাফরুল সাদিক, সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি :
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে পারাপারের দূর্ভোগ লাঘবে এলাকাবাসি সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নির্মাণ করছেন বাঁশের সাঁকো। উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের সোনাপুর ও পূর্ব জোড়গাছা গ্রামের নদী পারাপারে সুবিধার জন্য অবশেষে এ সাঁকো নির্মাণ করা হয়। বাঁশের এই সাঁকোটি পারাপারের একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছে।
স্থানীয়ারা জানান, গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহমান মরা বঙ্গালী নামে পরিচিত খালের দু’পাড়ে প্রায় ৮-৯ হাজার লোকের বসবাস। গত ৫বছর আগে থেকে নদীর মাঝে একটি করে বাঁশ ও কয়েকটি খুটির মাধ্যমে চলাচল করত। বর্ষা শুরু হতেই মেরামত করে তা আবার চলাচলে উপযোগী করে তোলা হতো এবং বর্ষা মৌসুম শেষ হলেই ভেঙ্গে ফেলতে হয়। এমনিভাবে পাঁচ বছর ধরে ভাঙ্গা-গড়ায় কেটে গেছে এ এলাকার মানুষের।
ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের সোনাপুর-পূর্ব জোড়গাছা গ্রাম ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ধামাচামা, বড়িয়া, কড়িতলা, জোড়গাছা গ্রামের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাচল এই বাঁশের সাকোর উপর দিয়েই। বাঁশের সাকোর দু’ পাড়ে গ্রামের মানুষের চলাচলের জন্য প্রায় ২ কিলোমিটার লম্বা মেঠো পথ রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে কাঁদাময় পথে সাধারণের পায়ে হেটে চলাচল করাই কঠিন হয়ে পরলেও ওই খালের উপর ব্রিজ না থাকায় বর্ষা চলাচল একেবারে থমকে যায়। তবে প্রায় সোয়া কিলোমিটার পথ ঘুরিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছুতে হয় এই ব্রিজের অভাবে।
জোড়গাছা পূর্বপাড়া গ্রামের ফুহাদ হাসান, বাবলু ও রুমেনা বেগম বলেন, দু’ধারের কাঁদামাখা পথ পায়ে হেঁটে খালের পাড়ে এসেই পারাপার নিয়ে হতাশ হয়ে পড়ি। দীর্ঘ কয়েক বছর আগে থেকে এরকম সমস্যায় থাকায় আমরা বাধ্য হয়ে নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে বাঁশের সাকো তৈরি করেছি। বাঁশ-কাঠ যে যেটুকু দিয়েছে, তা দিয়েই আমরা তৈরি করেছি এই বাঁশের সাঁকোটি। তাছাড়াও এলাকার চেয়ারম্যান রুবেল উদ্দিনসহ এলাকার অনেক হিতৈষী ব্যক্তিরা নগদ টাকা পায়সা দিয়ে বাঁশের সাকো তৈরি করতে সহযোগীতা করেছেন। সাকোটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকার মতো। প্রতি বছর ওইটুকু সহযোগীতা না পেলে হয়তবা বাঁশের সাকোটি তৈরি করা আমাদের জন্য তৈরি করা সম্ভব হয়ে উঠত না।
একই গ্রামের মহাসিন আলী প্রাং বলেন, সেতুটির নির্মাণ খবর ছড়িয়ে পড়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে এক ধরনের আনন্দের বন্যা বইছে। তবে সেতুটি আমাদের এলাকার মানুষের কাছে কেবল উন্নয়নই নয়, ঐক্যবদ্ধতার স্মৃতিও বহন করে চলবে।
এ ব্যাপারে ভেলাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান রুবেল উদ্দিন বলেন, সমস্যাটি দীর্ঘ দিনের হলেও সেতু তৈরি করার সরকারিভাবে কোন উদ্যোগ না নেয়ায় বাধ্য হয়ে পাঁচ বছর পূর্বে থেকে গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার ভুক্তভোগী জোড়াতালি দিয়ে বাঁশের সাকো তৈরি করছেন। এ ব্যাপারে আমি সংশ্লিষ্ট র্কর্তৃপক্ষকে সেখানে সেতু করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি, তবে আশা করি খুব শীঘ্রই সেখানে একটি সেতু তৈরি করা হবে।