ইমরান হোসেন ইমন, অনুসন্ধানবার্তা :
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় প্রায় ১০০ কিলোমিটার পাকা সড়কই এখন মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে। সড়কের মাঝের বড় বড় গর্তে যানবাহন আটকা পড়ে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনাও ঘটছে। এসব সড়ক দিয়ে চলাচলে জনসাধারনকে পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় এবং ওভার লোড বালুবাহী ট্রাক চলাচলের কারনেই এই উপজেলার প্রধান প্রধান সড়কগুলো ভেঙ্গে এ দূর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।
জানাগেছে, ধুনট উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে অভ্যন্তরীন প্রায় ২২৪ কিলোমিটার সড়ক স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এবং প্রধান সড়কগুলো সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এবং নির্মান করেছে। তন্মধ্যে অধিকাংশ সড়কই এখন চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। পুরো সড়ক জুড়েই কার্পেটিং এর খোয়া উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
তন্মধ্যে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্মিত ধুনট থেকে শেরপুর পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার, ধুনট থেকে সোনামুখি পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার, ধুনট থানা থেকে ছোট এলাঙ্গী পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার, ধুনট থেকে গোসাইবাড়ী পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার, ধুনট হুকুম আলী থেকে বাইপাস পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার, কাজিপুরের পাইকপাড়া থেকে দিঘলকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার, সোনাহাটা থেকে বাগবাড়ী পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার,
ধুনট এলজিইডির নির্মিত সোনাহাটা থেকে মাঝবাড়ি পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার, জয়শিং থেকে মাঝবাড়ি পর্যন্ত ২ কিলোমিটার খাটিয়ামারী থেকে ভানুডাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার, মথুরাপুর থেকে খাটিয়ামারী পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার, মথুরাপুর থেকে খাদুলী পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার, নলডাঙ্গা থেকে এলাঙ্গী পর্যন্ত ২ কিলোমিটার, এলাঙ্গী থেকে বিলচাপড়ী পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার সহ অভ্যন্তরীন প্রায় ১০০ কিলোমিটার পাকা সড়কই ভেঙ্গে সম্পূর্ণ চলাচলোর অনুপযোগি হয়ে পড়ে পড়েছে।
সড়কের মাঝের বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় ঘটছে দূর্ঘটনাও। সোমবার (০৯ আগষ্ট) দুপুরে ধুনট-সোনামুখি সড়কের বেলকুচি নামক স্থানে একটি ট্রাক গর্তে আটকে ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। এতে মুহুর্তের মধ্যে জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটিতে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় লোকজন জানায়, ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক বর্ধিতকরনের কারনে অধিকাংশ গাড়ী এখন সিরাজগঞ্জ থেকে বাইপাস হয়ে ধুনট-সোনামুখি সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছে। কিন্তু সড়কের মাঝের বড় বড় গর্তে আটকা পড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
এবিষয়ে বেলকুচি গ্রামের মকবুল হোসেন জানান, পাশ্ববর্তী কাজিপুর উপজেলা থেকে যমুনার ওভার লোড বালু নিয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাক এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছে। একারনে অল্প দিনেই এই সড়কের মাঝে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রতিদিনই এ সড়কে দূর্ঘটনা ঘটছে।
ধুনটের নিমগাছী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সুজাউদ্দৌলা রিপন জানান, তার ইউনিয়নে এলজিইডির নির্মিত প্রায় ১০/১৫ কিলোমিটার পাকা সড়কই এখন চলাচলের অনুপযোগি হয়ে গেছে। সড়কে খানা-খন্দে ভরে যাওয়ায় এলাকাবাসীর যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
ধুনট সদরের সাবেক চেয়ারম্যান এসএম মাসুদ রানা বলেন, ধুনট-বগুড়া সড়কের ধুনট থানা থেকে সোনাহাটা পর্যন্ত পাকা সড়ক নির্মান করার কথা থাকলেও প্রায় ৩ কিলোমিটার বাদ রেখেই সড়ক নির্মান করা হয়েছে। এতে এই সড়কের নলডাঙ্গা, পাকুরিহাটা এলাকার বিভিন্ন গর্তে গাড়ি আটকা পড়ে দূর্ঘটনা ঘটছে।
ধুনট উপজেলা প্রকৌশল কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম জানান, এলজিইডির ক্ষতিগ্রস্থ ২৫ কিলোমিটার সড়ক টেন্ডারের অপেক্ষায় রয়েছে।