ইমরান হোসেন ইমন, অনুসন্ধানবার্তা :
বগুড়া সদর উপজেলার ফাঁপোড় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মমিুনল ইসলাম রকি (৩৫) হত্যাকান্ডের ৩নং আসামী সহ আরো ২ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১২ এর একটি দল।
মঙ্গলবার (১০ আগষ্ট) রাত ১০টার দিকে বগুড়া সদরের তিন মাথা এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- বগুড়া সদর থানাধীন ফাঁপোড় গ্রামের রাজ্জাকের ছেলে মামলার ৩নং আসামী মাদক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী (৩২) এবং হত্যাকান্ডে জড়িত একই গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে মাদক ব্যবসায়ী রকি প্রামানিক (২৭)।
এর আগে গত ৩১ জুলাই চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডের প্রধান আসামী গাউছুল আজম সহ ৭ জনকে দেশি এবং বিদেশী অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে র্যাব।
জানাগেছে, গত ২৭ জুলাই রাত ৯ টার দিকে বগুড়া সদর উপজেলার ফাঁপোড় ইউনিয়নের সিরাজুল ইসলামের ছেলে আওয়ামীলীগ নেতা মমিুনল ইসলাম রকিকে (৩৫) মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় কুপিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায় দূর্বৃত্তরা।
পরে স্থানীয়রা তাকে মুমূর্ষ আহত অবস্থায় উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে রাত ১০টার দিকে আ’লীগ নেতা রকির মৃত্যু হয়।
এঘটনায় গত ২৯ জুলাই নিহত রকির ভাই রুকু হোসেন বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ্য করে এবং আজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ হত্যাকান্ডটি সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এ ঘটনার পর থেকেই র্যাব-১২, বগুড়া ক্যাম্পের কয়েকটি গোয়েন্দা দল ও বগুড়া সদর থানা পুলিশ এই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন এবং আসামীদের গ্রেফতারের জন্য মাঠে নামেন।
গত ২৯ জুলাই এই হত্যা মামলার ৮নং আসামী বগুড়া সদরের ফাঁপোড় মধ্যপাড়া এলাকার মৃত সাদেক আলীর ছেলে শাজাহান আলীকে (৩০) গ্রেপ্তার করে বগুড়া সদর থানা পুলিশ।
এরপর র্যাব-১২, বগুড়া ক্যাম্পের একটি দল অভিযান চালিয়ে রংপুর জেলার বদরগঞ্জ থানাধীন ছোট হাজিরপুর ফকিরগঞ্জ গ্রাম থেকে এই হত্যা মামলার ৫ জনকে আটক করা হয়।
এরপর তাদের দেয়া তথ্যমতে বগুড়া জেলার সদর থানাধীন ফাঁপোড় উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে হত্যা মামলা প্রধান আসামী গাউছুল আজম সহ আরো ২ জনকে আটক করা হয়। এসময় আসামীদের কাছ থেকে ১টি বিদেশী পিস্তল, ১টি ম্যাগজিন, ৩ রাউন্ড গুলি ও একটি চাপাতি উদ্ধার করে র্যাব।
এই হত্যা মামলায় র্যাবের অভিযানে গ্রেফতারকৃত অন্য আসামীরা হলো- বগুড়া সদরের ফাঁপোড় গ্রামের আঃ মজিদের ছেলে মামলার প্রধান আসামী গাউছুল আজম (২৮), একই গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে ২নং আসামী ফুয়াদ হাসান মানিক (২৯), কৈচর, গ্রামের মহসিন আলীর ছেলে ৪নং আসামী মেহেদী হাসান (১৮), ফাঁপোড় গ্রামের আখের আলীর ছেলে ১০নং আসামী আরিফুর রহমান (২৮) এবং হত্যাকান্ডে জড়িত মালগ্রাম এলাকার মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ছেলে আলী হাসান (২৮), কৈচর গ্রামের মাজেদ আলীর ছেলে ফজলে রাব্বী (৩০), বেলগাড়ী গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে আঃ আহাদ (২০)।
র্যাব-১২, বগুড়া ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন, (জি), বিএন জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীরা দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যবসা, মাদক সেবন ও অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকান্ডে লিপ্ত ছিল।
তাই এবিষয়ে মমিুনল ইসলাম রকি তাদেরকে মাদক সেবন, মাদক ব্যবসা ও অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকান্ডে বাধা প্রদান করত। এই কারনেই আসামীরা ভিকটিম রকিকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃত আসামী মোহাম্মদ আলী বগুড়ার বিভিন্ন এলাকায় ফেন্সিডিল, ইয়াবা, হেরোইন ও গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদক ব্যবসা করে আসছিল। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে মাদকের ৫টি মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা রকি হত্যার পর থেকেই বগুড়াসহ আশেপাশের জেলার বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেছিল। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বগুড়া জেলার সদর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।