স্টাফ রিপোর্টার, অনুসন্ধানবার্তা ::
বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছে ধলি বেগম (৬০)। তারপরও ভিক্ষাবৃত্তিতেই চলে তার সংসার। সন্তান না থাকায় ছোট বোনের একমাত্র ছেলেকে তার সামান্য আয় থেকেই লালন-পালন করছেন তিনি।

তবে ভিক্ষুক এই ধলি বেগম পৈত্রিক সূত্রে ১৭১ শতক জমি প্রাপ্ত হলেও তাকে ভিক্ষাবৃত্তিই করতে হচ্ছে।

এই ভিক্ষুক ধলি বেগম ধুনট উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের আনারপুর-কচুগাড়ি গ্রামের মোজাম্মেল হকের স্ত্রী।

তার বাবার বাড়ি পাশ^াবর্তী ঘুগড়াপাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত শুকরা মন্ডলের মেয়ে। তারা দুই ভাই ও দুই বোন।

এদিকে গত ১৩ অক্টোবর ধলি বেগমের ছোট বোন ভিক্ষুক হাসিলা বেগমকে বাড়ির পাশেই ধর্ষণের পর হত্যা করে দূর্বত্তরা। এঘটনায় ধুনট থানায় ভিক্ষুক ধলি বেগম বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে ধুনট থানা পুলিশ এ হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ২ জনকে আটকের পর জবানবন্দি আদায় করে বগুড়ার আদালতে সোপর্দ করে।

কিন্তু এরপরও ওই পরিবারের দূরদশা থেকে থেমে থাকেনি। গত ৬ সেপ্টেম্বর ভিক্ষুক ধলি বেগমের আরেক ভাই হাফিজার মন্ডলও নিখোঁজ হয়ে যায়।

এঘটনায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ হাফিজার রহমানের ছেলে মনি রহমান বাদী ধুনট থানায় একটি ডিজি করেন। (নং-৮৬৮, তাং-২১/০৯/২০২১)

তবে ভিক্ষুক ধলি বেগম জানান, জমিজমা ও পূর্ব শত্রুতা জেরে আমার এক বোনকে হত্যা করা হলেও সম্প্রতি আরেক ভাই নিখোঁজ রয়েছে। এঘটনায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর থানায় একটি জিডি দায়ের করা হলেও এখনও আমার ভাইয়ের কোন সন্ধান মেলেনি।

তাই ধারনা করা হচ্ছে আমার পৈত্রিক সম্পত্তির কারনেই এক বোনকে ধর্ষণের পর হত্যা এবং আরেক ভাইকে নিখোঁজ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় মুরব্বী ময়না মাস্টার বলেন, বিভিন্ন শালিশী বৈঠকের পরও স্থানীয় প্রভাবশালীরা ওই পরিবারকে কোন জমিজমা বের করে দেয়নি। একারনেই ওই পরিবার ভিক্ষাবৃত্তি এবং দিনমজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। ওই সম্পত্তির ওয়ারিশ ছিলো নিহত হাসিলা বেগম, এবং সম্প্রতি নিখোঁজ হাফিজুর রহমান, ভিক্ষুক ধলি বেগম ও দিনমজুর জামাল উদ্দিন।

তবে ওই পরিবারের পৈত্রিক ১৭১ শতক জমি থাকলেও তা বেদখল করেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এঘটনায় গত ২ নভেম্বর বগুড়ার আদালতে নিহত ভিক্ষুক হাসিলা বেগমের ছেলে হাসেম আলী বাদী হয়ে একই এলাকার কয়েক জনের নাম উল্লেখ করে বগুড়ার আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-২/০৯/২০২১ইং।

ধুনট থানার অফিসার (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, ওই পরিবারের ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত আসামীদের গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরন করা হয়েছে। তবে নিখোঁজ ব্যক্তির বিষয়েও তদন্ত চলছে।