শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি:
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার বিহার ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় ৭টি বাড়ি ভাংচুর, এক যুবকের হাত-পা কেটে নদীতে নিক্ষেপ সহ উভয়ের পক্ষের ১১ জন আহত হয়েছে। এসব ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে পুরুষ শুন্য গ্রাম।
জানা গেছে, ১১ নভেম্বর বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই এই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে উত্তেজনা ও সংঘর্ষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গত রবিবার বিহার বন্দরে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মতিউর রহমান মতিনের মোটরসাইকেল প্রতীক পোস্টার তার সমর্থকরা বাজারে টাঙ্গাতে গেলে আওয়ামীলীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর লোকজন বাঁধা প্রদান করে।
এতে উভয়ের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বাঁধে। এসময় মোটরসাইকেল মার্কার সমর্থিত ভাসুবিহার গ্রামের আনিছার রহমানের ছেলে সাজু মিয়া (৩০) আহত হয়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা বিহার মোন্নাপাড়া গ্রামে হামলা চালিয়ে ৭টি বাড়ি ভাংচুর করে। একপর্যায়ে একই গ্রামের আফজাল মুতল্লির ছেলে ইউপি সদস্য রায়হান আলীর ছোট ভাই আব্দুর রহমানকে (৩৩) ধারালোর অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে উঠে নিয়ে পার্শ্ববর্তী নাগর নদীর তীর নিয়ে যায়।
সেখানে তার হাত-পায়ের রগ কর্তন করে নদীতে নিক্ষেপ করে। আওয়ামীলীগ সমর্থিত লোকজন কর্তৃক বিহার মুন্নাপাড়া গ্রামের বেলাল হোসেন, আফজাল মুতল্লি, সবুজ মিয়া, নিজাত আলী, আঃ রহমান, মুঞ্জু মিয়া, আব্দুল এর বাড়ী ঘর ভাংচুর করে। বিকাল ৩টার দিকে আহত আব্দুর রহমানকে শিবগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসলে চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম সহ তার লোকজন একত্রিত হয়ে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে হামলা চালিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থিত আওয়ামীলীগ নেতা রেজাউল করিম, এসএসসি পরীক্ষার্থী আব্দুর রউফ, আতিকুর রহমান, রবিন ও গৃহবধু ফরিদাকে বেধরক ভাবে মারপিট করে।
এব্যাপারে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো: মতিউর রহমান বলেন, আমার সমর্থিত লোকজন বিহার বাজারে পোস্টার লাগাতে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাতে বাঁধা সৃষ্টি করে মারপিট করে। পরে হামলাকারীরা মুন্না পাড়া গ্রামে রায়হান মেম্বাররে ছোট ভাইয়ের হাত-পায়ের রগ কর্তন করে নদীতে নিক্ষেপ করে।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম বলেন, দুপুরে মোটরসাইকেল মার্কার লোকজন হঠাৎ করে আমার দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুরের ঘটনা ঘটায়। এ ঘটনায় আমার এক কর্মী আবু সাইদ আহত হয়।
এব্যাপারে শিবগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানার পর বিহার বাজার এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে আছে। সরকারি হাসপাতালে সংঘর্ষে খবর জানতে পেরে তাৎক্ষনিক ভাবে আমি নিজে ফোর্স সহ ঘটনাস্থলে পৌঁছা মাত্রই হামলাকারীরা প্রাচীর টপকে পালিয়ে যায়। তখন ঘটনাস্থল থেকে ২টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযানে বিহার এলাকায় বাড়ি বাড়ি তল্লশী চলছে। তবে এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।