গাইবান্ধায় বোমা হামলায় শিশুসহ ৮ জনকে হত্যার ৭ বছরেও শেষ হয়নি বিচার

শাহারুল ইসলাম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি: অনুসন্ধানবার্তা :
বাসে দেওয়া আগুনে স্ত্রী-ছেলে-মেয়েকে হারিয়েছি। কিন্তু সাত বছরেও স্ত্রী-সন্তান হত্যার বিচার শুরু হয়নি। সেদিনের ঘটনা মনে হলে ভয়ে আঁতকে উঠি। অথচ হত্যাকারীরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। দ্রুত দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি করেন স্ত্রী সন্তান হারানো সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের তারা মিয়া।

গত ৬ ফেব্রুয়ারী গাইবান্ধা জেলার তুলসীঘাটে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা হামলার ৭ বছর পূর্ণ হয়েছে। ২০১৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারী আগুনে প্রাণ হারায় শিশুসহ আট জন শ্রমজীবী নারী-পুরুষ। বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের ৭৭ জন নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করলেও শেষ হয়নি বিচার কার্যক্রম।

তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান, চার্জ গঠনের পর এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। আগামি ১৪ মার্চ মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে। দ্রুতই মামলার বিচারকাজ শেষ করার আশা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর।

সেদিনের ঘটনা তুলে ধরে ভুক্তভোগী বলরাম দাস বলেন, ‘স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে ঢাকার বালুগাঁ এলাকায় শ্রমিকের কাজ করতাম। বাড়ি থেকে ঢাকা যাওয়ার সময় বাসে আগুন ধরে। ঘটনার সময় মেয়ে তার মায়ের কোলে ঘুমিয়ে ছিল। আগুন দেখে স্ত্রীকে নিয়ে দ্রুত বাস থেকে নামলেও মেয়ে আগুনে পুড়ে মারা যায়। আগুনে আমরাও দগ্ধ হই। এখনো শরীরে ক্ষতচিহ্ন নিয়ে বেঁচে আছি। তিনি এঘটনার দ্রুত বিচার দাবী করেন।

উল্লেখ্য, গত ২০১৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি দেশজুড়ে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা হরতাল-অবরোধের সময় গাইবান্ধা সদরের তুলশীঘাটের বুড়িরঘর নামক এলাকায় রাত ১০টার দিকে ঢাকাগামী নাপু এন্টারপ্রাইজের একটি নৈশকোচে পেট্রোল বোমা ছোঁড়ে দুর্বৃত্তরা।

পেট্রোল বোমার আগুনে ঘটনাস্থলেই দগ্ধ হয়ে মারা যায় শিশুসহ ৬ জন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ২ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় দগ্ধ হয় শিশুসহ অন্তত ৩৫ জন যাত্রী।

সেই পেট্রোল বোমা হামলার ৭ বছর অতিবাহিত হলেও সেই ভয়াবহ স্মৃতি ও স্বজন হারানোর বেদনা ভুলতে পারেননি অনেকেই। আহত অনেকেই শরীরে ক্ষত চিহ্ন নিয়ে বেঁচে আছেন। ঘটনার পর সরকারিভাবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো সামান্য সহায়তা পেলেও তাদের আর কেউ খোঁজ রাখেনি। দ্রুত এ ঘটনার বিচার ও জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।