নিজস্ব প্রতিবেদক, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে উজ্জল প্রামানিক নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে রায় ঘোষণার সময় অভিযুক্ত স্বামী পলাতক ছিলেন।
রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক একেএম ফজলুল হক এই রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত উজ্জল প্রামানিক বগুড়া সদরের কৈচর দক্ষিণ পাড়ার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে।
বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নরেশ চন্দ্র মুখার্জি এতথ্য নিশ্চিত করে জানান, বগুড়া শহরের সুত্রাপুর এলাকার আকবর আলীর মেয়ে আলো বেগমের সঙ্গে ২০০৬ সালে উজ্জলের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় উজ্জলকে নগদ ৩০ হাজার টাকা যৌতুক হিসেবে দেন আকবর আলী।
কিন্তু বিয়ের এক মাস পর আসামি উজ্জল আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এ নিয়ে উজ্জলের বাড়িতে দুই পক্ষ শালিস বৈঠকে বসেন। শালিসে উজ্জল ও তার স্বজনেরা জানায়, যৌতুকের ৫০ হাজার টাকা না দিলে আলো বেগমকে তালাক দেয়া হবে। আলোর বাবাও আর কোনো টাকা না দিয়ে চলে আসেন।
আইনজীবী নরেশ চন্দ্র আরো জানান, ওই পরিস্থিতি চলা অবস্থায় ১ আগস্ট উজ্জল তার শ্বশুর বাড়িতে খবর পাঠান যে, আলো বেগম অসুস্থ। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন কৈচড় গেলে ঘরের তীরের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় আলো বেগমের মরদেহ দেখতে পান।
পরবর্তীতে ১৮ আগস্ট বগুড়া সদর থানায় এ ঘটনায় আলো বেগমের দুলাভাই জাহাঙ্গীর আলম একটি হত্যা মামলা করেন। তবে মামলার পর থেকেই নিহতের স্বামী উজ্জল প্রামানিক পলাতক রয়েছেন।
নরেশ চন্দ্র মুখার্জি বলেন, ওই সময় আলো বেগমের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে চালানো চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ময়নাতদন্তে হত্যার আলামত পাওয়া যায়। পরে এসব আলামত যাচাইবাছাই ও বিভিন্ন সাক্ষ্যে জানা যায়, আলো বেগমকে মারধর করে হত্যার পর তীরের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছিল তার স্বামী উজ্জল।
এই হত্যার মামলায় দীর্ঘ শুনানির শেষে উজ্জলকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেন বিচারক।
এছাড়া এই মামলায় আরও চার আসামি হিরা প্রামানিক, আলেয়া বেওয়া, লাভলি বেগম ও নাজমুল হোসেনকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।