ইমরান হোসেন ইমন, অনুসন্ধানবার্তা:
বর্ষাকালেও তেমন বৃষ্টির দেখা নেই। মাঝে মধ্যে কয়েক ঘন্টার বৃষ্টিপাত হলেও তা প্রখর রৌদ্রে বৃষ্টির পানি আবারো শুকিয়ে যায়। বর্ষার ভরা মৌসুমেও নদী-নালা, খাল-বিলে এখন হাঁটু পানি। তাই পানি স্বল্পতায় পাট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার পাট চাষিরা। অনেকে বাড়ির উঠনে বা জমিতেই গর্ত করে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি জমিয়ে সেখানে পাট গাছ জাগ দিয়ে রাখছেন। তবে স্বল্প পানিতে পাট গাছ জাগ দেওয়ায় পাটের আঁশের গুনগত মান কম হওয়ার আশংকা করছেন কৃষকেরা।
ধুনট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানাযায়, ধুনট উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ২ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে।
চৌকিবাড়ী গ্রামের কৃষক আফসার আলী বলেন, এখন বর্ষার ভরা মৌসুম হলেও বৃষ্টির কোন দেখা নেই। তাই জমির পাশে গর্ত করে সেচ দিয়ে ও জমানো বৃষ্টির পানিতে পাট গাছ জাগ দিচ্ছেন। তবে অল্প পানিতে পাট জাগ দেওয়ায় আঁশের গুনগত মানও কমে যাবে। এছাড়া এবছর শ্রমিকের মজুরীও অনেক বেশি। তাই ফলন ভালো হলেও তেমন লাভের মুখ দেখবে না কৃষকেরা।
ধুনট পৌরসভার চরধুনট গ্রামের সোহরাব আলী বলেন, ইছামতি নদীর তীরবর্তী দেড় বিঘা জমিতে পাট করছিলাম। পাট গাছ কাটার পর ইছামতি নদীতে জাগ দিলেও পানি নেমে যাওয়ায় তিন বার স্থান পরিবর্তন করতে হয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় নদী-নালা, খাল-বিলে পানি নেই।
ধুনট উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাজেদুল করিম জানান, নদী বিধৌত এলাকা হওয়ায় এই উপজেলার ১০টি ইউনিয়নেই পাট চাষের উপযোগি। তন্মধ্যে নিমগাছী, মথুরাপুর, গোপালনগর ও চৌকিবাড়ী ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি পাট চাষ হয়ে থাকে।
নিমগাছী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোনিতা নাসরিন বলেন, এবছর অনাবৃষ্টির কারনে এসব জলাশয়ে পর্যাপ্ত পানি নেই। তাই পাট চাষিরা অনেকটাই বিপাকে পড়েছেন।
ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় ২ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে দেশী, তোষা ও মেসতা জাতের পাট চাষ হয়েছে। ভলনও অনেক ভালো হয়েছে। তবে অনেক এলাকায় পানির জন্য কৃষকরা কিছুটা দুশ্চিন্তায় থাকলেও তাদেরকে রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট জাগ দেওয়ার পারামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এতে পাটের গুনগত মানও অনেক ভালো হয়।