ইমরান হোসেন ইমন, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়া জেলায় সার, কীটনাশক ও ডিজেলের উর্দ্ধমুখি দামে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকেরা। সার ও সেচের বাড়তি খরচ যোগাতে রোপা-আমন ধান চাষে নাভিশ্বাস উঠেছে এই জেলার কৃষকদের।
সরেজমিনে বগুড়া জেলার ধুনট, শেরপুর ও সারিয়াকান্দিসহ বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে এবং কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোপা-আমন ধান চাষের ভরা মৌসুমে বৃষ্টি ছিল খুবই কম। নীচু জমিতে কেউ কেউ বৃষ্টির পানিতে রোপা-আমনের চারা লাগালেও বেশীর ভাগ কৃষকই ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিনের আশ্রয় নিয়েছে। অথচ রোপা-আমন চাষে কৃষকরা বৃষ্টির উপরই নির্ভর করতো।
আবার চারা লাগানোর পর জমি শুকিয়ে গেলে বাধ্য হয়েই মেশিন দিয়ে সেচ দিতে হচ্ছে। ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে কৃষকদের।
এছাড়া সার, কীটনাশকের মূল্য বাড়ায় অতিরিক্ত টাকাও গুনতে হচ্ছে তাদের। সেচ আর সারের কারনে গত বছরের চেয়ে দ্বিগুন খরচের বোঝায় ধান চাষে দিশেহারা হয়ে পড়ছে কৃষকেরা।
ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ী গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন জানান, বৃষ্টি কম হওয়ায় রোপা রোপন থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দিতে হচ্ছে।
একই গ্রামের শ্যালো মেশিনের মালিক সুজিত জানান, অনাবৃষ্টির কারনে রোপা রোপনের সময় জমি তৈরি করতে প্রতি বিঘায় পানি দিতে ৩শত টাকা থেকে সাড়ে ৩শত টাকা পর্যন্ত নিয়েছি। এখন জমিতে প্রতি বিঘায় পানি দিতে ২ শত টাকা করে নিচ্ছি।
সারিয়াকান্দী উপজেলার কৃষক জহরুল ইসলাম জানান, সেচ দিয়ে ধান চাষ চলছে। তার উপর গত বছরের চেয়ে এবার সার, কীটনাশকের দামও বেশী। তাই ধান আবাদ করতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছি। তবে ধান কাটার পর বাজারে ধানের দাম কত পাবো তা নিয়েই দুঃচিন্তায় রয়েছি।
বগুড়া জেলা কৃষি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক এনামুল হক জানান, বগুড়ায় এবার রোপা-আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে।
তবে অনাবৃষ্টিতে সঠিক সময়ে চারা রোপন না করতে পারা এবং চারা রোপনের পর বৃষ্টি কম হওয়ায় উৎপাদন কমার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও সারের দাম বৃদ্ধি এবং তেলের মুল্যবৃদ্ধির কারনে শ্যালো মেশিনে সেচ নির্ভর হওয়ায় উৎপাদন খরচও বেড়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা।