ইমরান হোসেন ইমন, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ায় আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় যোগ দিতে গিয়ে শাজাহানপুর উপজেলা চেয়ারম্যানকে প্রকাশ্যে পিস্তুল উঁচিয়ে হুমকি দেওয়ায় বগুড়া-৭ (শাজাহানপুর-গাবতলী) আসনের এমপি রেজাউল করিম বাবলুর উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদের হলরুমে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির সভায় যোগ দিতে যাওয়ার সময় এই ঘটনা ঘটে।
এসময় এমপিকে রক্ষা করতে গেলে তার ব্যক্তিগত সহকারী সেলিম রেজাকে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয়সূত্রে জানান, বুধবার সকাল ১০ টার দিকে শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদের হলরুমে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির সভা ছিল। সভায় অংশ নিতে বগুড়ার-৭ (শাজাহানপুর-গাবতলী) আসনের এমপি রেজাউল করিম বাবলু শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদে যান।
তখন সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ নিয়ে এমপি রেজাউল করিম বাবলুর সঙ্গে উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বাদশা আলমগীরের হট্টোগোল শুরু হয়। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ছান্নু সেখানে এলে এমপি তার কোমরে থাকা লাইসেন্সকৃত পিস্তল বের করে গুলি করার হুমকি দেন। তখনই যুবলীগের নেতাকর্মীরা এমপির ওপর হামলা চালায়। হামলায় তার ব্যক্তিগত সহকারী সেলিম রেজা আহত হয়।
এবিষয়ে এমপি রেজাউল করিম বাবলু জানান, বুধবার আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির সভায় অংশ নিতে তিনি উপজেলা পরিষদে যান। তবে তিনি পৌঁছানোর আগেই সভা শুরু হয়ে যায়। তখন তিনি ইউএনওর সঙ্গে কথা বলার জন্য তার কার্যালয়ের দরজার সামনে অপেক্ষা করছিলেন।
এ সময় উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বাদশা আলমগীরসহ যুবলীগের ৪/৫জন নেতা হঠাৎ করে এসে তার ওপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে যুবলীগ নেতা বাদশা আলমগীর রড দিয়ে তার ব্যক্তিগত সহকারীকে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। এরপর উপজেলা চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ছান্নু এসে আমাকে ধাক্কা দেয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ আমাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় এবং আহত সেলিম রেজাকে হাসপাতালে পাঠায়।
এমপি বাবলু আরো বলেন, আমি একজন এমপি। আমার ওপর হামলা চালানো হলো, কিন্তু তারপরও নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে দেখতে আসলেন না, খোঁজও নিলেন না।
তবে ব্যাপারে শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা সোহরাব হোসেন ছান্নু জানান, এমপির সাথে আমার কিছুই হয়নি। উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে এমপির পিএস এর ঝামেলা ছিল, সেটা নিয়ে একটা হট্টগোল হয়েছে মাত্র। আর ঘটনার এক পর্যায়ে এমপি বাবলু তার লাইসেন্সকৃত অস্ত্র উঁচিয়ে ধরে গুলি করার হুমকি দেয়।
এবিষয়ে শাজাহানপুর উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বাদশা আলমগীর বলেন, এমপি বাবলু কিংবা তার পিএস এর ওপর কোন হামলা করা হয়নি। তবে কাবিখার কাজ নিয়ে ঝামেলা ছিল। সেটা নিয়েই কথা হচ্ছিল। কিন্তু এক পর্যায়ে উপজেলা চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ছান্নু সেখানে এলে এমপি তার কোমরে থাকা পিস্তল বের করে গুলি করার হুমকি দেন।
তবে পিস্তল বের করে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে এমপি বাবলু বলেন, আত্মরক্ষার্থে আমি আমার লাইসেন্স করা পিস্তল বের করেছিলাম।
তবে এসব বিষয়ে জানতে শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আহাম্মেদের সাথে মোবাইলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
তবে এবিষয়ে শাজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ওই ঘটনায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।