ইমরান হোসেন ইমন: অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ার ধুনট সদরের কলেজ ছাত্র রাকিব হাসান। তিনি একটি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া এই রাকিব কবুতর পালন করেই সংসারের হাল ধরেছেন। বাবার মৃত্যুর পর এই কবুতর পালন করেই তার বিধবা মা ও ছোট বোনের মুখে হাঁসি ফুটিয়েছেন।
কিন্তু হঠাৎ করেই তার কবুতর পালন যেন এখন হতাশায় পরিনত হয়েছে। কবুতরের খাদ্যের দাম দ্বিগুন বৃদ্ধিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে এই খামারী রাকিব হাসান।
তবে শুধু এই রাকিব হাসানই নন, তার মতো ধুনট উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের দরিদ্র পরিবারের প্রায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ও বেকার যুবকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। গত কয়েক মাস ধরে দফায় দফায় কবুতরের খাদ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে এই পেশা ছেড়ে দিচ্ছেন এখন অনেকেই।
ধুনট সদরের বেলকুচি গ্রামের শিক্ষার্থী রকিব হাসান জানান, কবুতর পালন একটি সৌখিন পেশা। তাই এই পেশাকে বেছে নিয়ে বাড়িতে একটি ঘর নির্মান করে দুই বছর আগে সেখানে ১০টি কবুতর দিয়ে খামার শুরু করেছিলাম। এখন আমার খামারে বিভিন্ন জাতের প্রায় ২০০টি কবুতর রয়েছে। এপর্যন্ত আমার ব্যায় হয়েছে প্রায় তিন লাখ টাকার মতো। কিন্তু হঠাৎ করেই কয়েক দফা কবুতরের খাদ্যের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় খামার পরিচালনার ব্যায় অনেকটাই বেড়ে গেছে। এতে অনেক লোকসান গুনতে হচ্ছে।
মথুরাপুর ইউনিয়নের খাদুলী গ্রামের কবুতর খামারী জুয়েল রানা বলেন, খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় কবুতরের চাহিদাও কমে গেছে। গত বছর কবুতরের খাদ্য সরিষা ছিল ৩৫ টাকা কেজি। কিন্তু তা এখন বেড়ে দাড়িয়েছে ১০০ টাকা কেজিতে। গমও ছিল একই দাম, কিন্তু সেটাও এখন ৫০ টাকা কেজিতে কিনতে হচ্ছে। এছাড়াও কবুতরের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত ধান, চাল, ঝেইন্টা ও খেরাচির দামও দ্বিগুন হয়েছে।
ধুনটের হাটে কিং নামে এক জোড়া কবুতর বিক্রি করতে এসেছিলেন জোড়খালি গ্রামের জহুরুল। তিনি জনান, যে কবুতরের দাম ২৫ হাজার টাকা ছিল, সেই কবুতর এখন ৫ হাজার টাকাতেও কেউ কিনছে না।
এবিষয়ে ধুনট হাটের পাইকারী কবুতর বিক্রেতা নুুরু মিয়া জানান, এখন হাটে ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতা বেশি। তাই কবুতরের দাম অনেকটাই কমে গেছে।