নিজস্ব প্রতিবেদক, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ার ধুনট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগে একাধিক বার একেক জনকে অব্যাহতি ও পদ বদলে ক্ষুদ্ধ হয়েছে নেতাকর্মীরা। সর্বশেষ ধুনট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর সেলিম রেজা রিমানকে অব্যাহতি প্রদান করায় ক্ষোভে এই কমিটির ২২ নেতা একসঙ্গে পদত্যাগ করেছেন।
সোমবার সন্ধ্যায় ধুনট মডেল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই গণ পদত্যাগের ঘোষণা দেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সেলিম রেজা রিমান বলেন, গত ৩ ডিসেম্বর সারিয়াকান্দি-সোনাতলা আসনের প্রয়াত এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় ধুনট ও শিবগঞ্জ অংশ নেয়। ওই খেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রায়াত এমপি আব্দুল মান্নানের স্ত্রী বর্তমান এমপি সাহাদারা মান্নান।
সেই খেলা দেখতে এমপি হাবিবর রহমানের ছেলে ধুনট উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী ইকবাল সনির সঙ্গে আমিসহ স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীরা অংশ নেই।
একারনে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ম. আব্দুর রাজ্জাক এর নির্দেশে অসাংগঠনিক ভাবে ধুনট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে আমাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সেলিম রেজা রিমান আরো বলেন, সারিয়াকান্দি-সোনাতলা আসনে ম. আব্দুর রাজ্জাক এমপি মনোনয়ন প্রত্যাশী। তাই বর্তমান এমপি সাহাদারা মান্নানের সঙ্গে আমরা খেলা দেখায় এবং ফেসবুকে ছবি পোষ্ট করায় আব্দুর রাজ্জাক ক্ষিপ্ত হয়ে গঠনতন্ত্র বহির্ভূতভাবে আমাকে আমার পদ থেকে বাদ দিয়েছে।
কিন্তু মরহুম আব্দুল মান্নান এমপি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার নামে অনুষ্ঠিত খেলা দেখায় আমাকে অন্যায়ভাবে স্বেচ্ছাসেবকলীগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
ভিডিও- অনুসন্ধানবার্তা
সেলিম রেজা রিমান অভিযোগ করে বলেন, ম.আব্দুর রাজ্জাকের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলে কাজ না করায় বিগত দিনেও ধুনট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে জিএস ফেরদৌস আলম শ্যামল এবং তারপর হেদায়েতুল ইসলাম গামাকেও একই পদ থেকে সংগঠন বহির্ভূতভাবে অসাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় তাদেরকেও অব্যাহতি প্রদান করে।
তবে তাদেরকে সরিয়ে দিয়ে আমাকে সেই দায়িত্ব দেওয়ার আগে ম. আব্দুর রাজ্জাক বলেছিলেন, ‘তোর আওয়ামী লীগ বা অন্য কোন লীগ করা যাবে না, শুধু রাজ্জাক লীগ করতে হবে।’
কিন্তু আমি মুক্তিযোদ্ধার চেতনায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার একজন কর্মী হিসাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সকল প্রোগ্রামে অংশ নেই। আমি বগুড়ার ধনুট পৌরসভার সর্ববৃহৎ ৫নং ওয়ার্ডের সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে সর্বকনিষ্ঠ কাউন্সিলর হিসেবে জয়লাভ করি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, ধুনট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের বর্তমান সভাপতি এবি, এস, সবুজ, ম. আব্দুর রাজ্জাকের ব্যক্তিগত অফিসের পিয়ন ছিলেন। সেই পিয়ন কে ঢাকা থেকে ধরে এনে ধুনট উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতির মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসিয়ে দেয় ম. আব্দুর রাজ্জাক।
তাই তার এসব গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ক্ষুদ্ধ হয়ে ধুনট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের কমিটি থেকে ২২ জন নেতা পদত্যাগ করেছেন।
তাই এসব বিষয়ে আওয়ামীলীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কেন্দ্রীয় আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বাহাউদ্দীন নাছিম, বর্তমান সভাপতি গাজী মেজবাউল সাচ্চু এবং সাধারণ সম্পাদক আফজাল বাবুর সুদৃষ্টি কামনা করছি।