সাইফুল ইসলাম, ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি, অনুসন্ধানবার্তা:
ঢাকার ধামরাইয়ে চাঞ্চল্যকর মাকসুদা বিবি হত্যা মামলার প্রধান আসামী সাবেক স্বামী আব্দুল হক ইব্রাহীম শেখ (৫০)’কে আটক করেছে র্যাব। শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) ফরিদপুরের কোতয়ালী থানার কানাইপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-৪ জানায়, ২৮ ডিসেম্বর সকাল ১১টার সময় ধামরাই উপজেলার কালামপুর চৌড়াপাড়া এলাকায় দুই হাত বাঁধা ও নাক দিয়ে রক্ত বের হওয়া অবস্থায় মাকসুদা বিবির মরদেহ পাওয়া যায়। উক্ত ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে ধামরাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর র্যাব-৪ এর সদস্যরা আসামীদের গ্রেফতারে ছায়া তদন্ত শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, আসামী আব্দুল হক ইব্রাহীম শেখ ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানার কানাইপুর বাজার এলাকায় অবস্থান করছে। যার প্রেক্ষিতে র্যাব-৪ ও র্যাব-৮ এর যৌথ আভিযানিক দল উক্ত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি আব্দুল হক ইব্রাহীম শেখ (৫০)’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী মৃত মাকসুদা বিবি’কে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।
র্যাব-৪ এর সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, ভিকটিম মৃত মাকসুদা বিবি এবং তার বর্তমান স্বামী পান্নু দুজনই ইট ভাটায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো।
গ্রেফতারকৃত আসামী আব্দুল হক ইব্রাহীম শেখ (৫০) এর সাথে ২০০৮ সালে মাকসুদা বিবি (৩৬) এর বিবাহ হয় এবং বৈবাহিক জীবনে তাদের একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে। কিন্তু পারিবারিক কলহের জেরে ২০১৭ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয় এবং ভিকটিম মাকসুদা বিবি তার ছেলেকে নিয়ে আসামী ইব্রাহীম শেখের পরিবার ছেড়ে চলে আসে এবং পরবর্তীতে পান্নু মিয়াকে বিয়ে করে নতুন জীবন-যাপন শুরু করে। যেহেতু পূর্বের স্বামী আসামী ইব্রাহীম এর সন্তান মাকসুদা বিবির কাছে থাকে, সেই সুবাধে আসামী ইব্রাহীমের সাথে মাকসুদার প্রায়ই যোগাযোগ হতো এবং তাঁরা মাঝে-মধ্যে দেখা করতো।
গত ২৭ ডিসেম্বর আসামী আব্দুল হক ইব্রাহীম শেখ (৫০) তাঁর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রাতে মাকসুদা বিবির সাথে দেখা করার জন্য ঢাকার ধামরাই উপজেলার চৌড়াপাড়া এলাকায় আসলে রাত অনুমান ২টার সময় আসামী ইব্রাহীম ভিকটিমকে ফুসলিয়ে চৌড়াপাড়া এলাকার একটি কলাবাগানে নিয়ে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে মাকসুদাকে ধর্ষণ করে।
এই ধর্ষণের বিষয় এবং আরো নানাবিধ কারণে তাদের মধ্যে বাগবিতন্ডার এক পর্যায়ে আসামী ইব্রাহীম ভিকটিমকে আঘাত করলে সে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। পরবর্তীতে আসামী ভিকটিমের পরিহিত কাপড় খুলে দুই হাত বাঁধে এবং শ্বাসরুদ্ধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।