ধুনটে মাদক মামলায় ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক কারাগারে

ইমরান হোসেন ইমন, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ার ধুনটে মাদক মামলায় মথুরাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মর্তুজাকে (৪৮) দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া এই মামলায় তাকে ৪ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো ১ মাসের বিনাশ্রম করাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। আসামীর উপস্থিতে এই রায় ঘোষণা করেন বিচারক। আসামী গোলাম মর্তুজা বর্তমানে জয়পুরহাট জেলা কারাগারে রয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত আওয়ামীলীগ নেতা গোলাম মর্তুজা মথুরাপুর ইউনিয়নের পীরহাটি গ্রামের মাওলা বক্স মোল্লার ছেলে।

এদিকে গত ১৯ জুন রায় ঘোষণার পর আওয়ামীলীগ নেতা গোলাম মর্তুজাকে কারাগারে পাঠানো হলেও সম্প্রতি এই ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায় সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে এ নিয়ে চলছে তুমুল সমালোচনার ঝড়। অনেক নেতাকর্মী তাকে স্থায়ী বহিস্কারেরও দাবি জানিয়েছেন।

মামলাসূত্রে জানাগেছে, ২০০৮ সালে এসআই পরিবহনের সুপারভাইজার পদে কর্মরত ছিলেন আওয়ামীলীগ নেতা গোলাম মর্তুজা। সেই বছরের ১২ জুলাই তিনি হিলি থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রীবাহী ওই পরিবহনে ৮০ বোতল ফেন্সিডিল নিয়ে রওনা দেন। পথিমধ্যে জয়পুরহাট জেলার বিশ্বাসপাড়া পাকা রাস্তায় পৌঁছালে র‌্যাব সদস্যরা যাত্রীবাহী বাসটির গতিরোধ করে তল্লাশি চালায়। এসময় ৮০ বোতল ফেন্সিডিল সহ গাড়ির সুপারভাইজার গোলাম মোর্তুজা এবং হেলপার মুঞ্জুরুল ইসলাম (৩৫) ও চালক মাসুদ রানাকে (৫৫) গ্রেফতার করে র‌্যাব।

এঘটনায় র‌্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পের তৎকালীন এসআই মোস্তফা কামাল বাদি হয়ে জয়পুরহাট থানায় গ্রেফতারকৃত তিনজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার তৎকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা গাড়ির চালক মাসুদ রানাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে গোলাম মোর্তুজা এবং মুঞ্জুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জসীট দাখিল করেন।

গত ১৯ জুন ওই মামলায় গোলাম মর্তুজা জয়পুরহাট আদালতে হাজিরা দিতে গেলে বিচারক শুনানী শেষে রায় ঘোষণার পর আসামি গোলাম মোর্তুজাকে আদালত থেকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। এছাড়া এই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত অপর আসামী মুঞ্জুরুল হক পলাতক রয়েছে।

তবে একজন মাদক ব্যবসায়ী কিভাবে বগুড়ার ধুনট উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন এনিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে আলোচনা ও সমালোচনা।

অনুসন্ধানে জানাগেছে, ২০০৮ সালে বাসের সুপারভাইজারের চাকুরী করে মাদক মামলায় জেল যাওয়ার পর বেরিয়ে এসেই গোলাম মর্তুজা ২০১০ সালের দিকে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশ করেন। এরআগে তিনি ২০০২ সালে মথুরাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, গোলাম মর্তুজারের বিরুদ্ধে থানায় কোন গ্রেফতারী পরোয়ানা আসেনি। তাই এই বিষয়টি জানা নেই।

তবে এবিষয়ে ধুনট উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যাপক টিআইএম নূরুন্নবী তারিক বলেন, ২০১০ সালের দিকে সম্মেলনে ভোটের মাধ্যমে গোলাম মর্তুজা মথুরাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছে। তবে আওয়ামীলীগ বৃহৎ সংগঠন। তাই কোন ব্যক্তির অপরাধ দল কোন ভাবেই বহন করবে না। এবিষয়ে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।