বগুড়ায় হত্যার দায় এড়াতে নিরাপরাধ ছাত্রকে পুলিশের কাছে তুলে দিয়েছে শিক্ষক

স্টাফ রিপোর্টার, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ায় এক মাদ্রাসা ছাত্রের হত্যার দায় এড়াতে একই মাদ্রাসার নিরাপরাধ আরেক ছাত্রকে পুলিশের কাছে তুলে দিয়েছে শিক্ষকেরা। রবিবার (৬ আগস্ট) বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন আটককৃত ছাত্রের বাবা শেরপুর উপজেলার কানাইকান্দর এলাকার বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে মোঃ আব্দুর রহমান সাবিত ধর্মীয় শিক্ষা লাভের আশায় বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের শেরুয়া বটতলা বাজরস্থ তাহ্্সীনুল কুরআন আদর্শ হাফেজিয়া মাদ্রাসায় প্রায় ৫ বছর পূর্বে ভর্তি করে দিই। কিন্তু গত ২ আগস্ট ওই মাদ্রাসায় কাউসার নামের এক ছাত্রকে কে বা কারা হত্যা করে মাদ্রাসার টয়লেটে ফেলে রাখে। এদিকে এই হত্যার দায় এড়াতে মাদ্রাসার শিক্ষকগণ আমার নিরাপরাধ শিশু সন্তান মোঃ আব্দুর রহমান সাবিত কে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে জড়িত করে মামলা দায়ের করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে।

তিনি বলেন, আমার সন্তান মোঃ আব্দুর রহমান সাবিত বর্তমানে ১২ পারা হেফজ সম্পন্ন করেছে। বর্তমানে তার বয়স ১২ বছর ৬মাস। ঘটনার দিন ফজর নামজ শেষে আমার সন্তান যথারীতি ক্লাসে অবস্থান করে। ওই দিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিট থেকে ৭টা পর্যন্ত নাস্তা শেষ করে যথারীতি ক্লাশে অংশগ্রহণ করে ক্লাশ চলতে থাকা অবস্থায় শিক্ষকগণ নিহত ছাত্রকে টয়লেটে পড়ে আছে দেখে হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃত ঘোষণা করেন।

এরপরও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ অভিভাবক হিসেবে আমাকে কোন প্রকার ফোন বা কোন প্রকার যোগাযোগ করে নাই। পরবর্তীতে আমি অন্য ছাত্রের অভিভাবকের কাছ থেকে খবর পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে মাদ্রাসায় যাই। তখন পুলিশ আমাকে ও আমার ছেলেকে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে গেলে আমার ছেলের কাছ থেকে আমি জানতে পারি যে, মাদ্রাসার ক্বারীমুল হুজুর আমার সাথে যোগাযোগ করতে নিষেধ করেছে এবং মাদ্রাসার ফজলে রাব্বী হুজুর মাদ্রাসার বেলকনীতে নিয়ে গিয়ে আমার ছেলেকে বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখিয়ে বলে যে, আমরা যে ভাবে বলতে বলব তুমি তাই বলবে। এপর পর আমি মাদ্রাসায় থাকা সিসি ক্যামেরার বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ, নিহত ছাত্রের পিতার সাক্ষাতকার সহ কিছু তথ্য সংগ্রহ করে বুঝিতে পারি যে, আমার ছেলেকে কৌশলে ফাঁসানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অভিভাবক শহিদুল ইসলাম জানান, গত ১ বছর পূর্বে তার ছেলেকে ওই মাদ্রাসার এক শিক্ষক ব্যপক মারপিট করে। এক পর্যায়ে তার ছেলের গলা কেটে যায়। তখন শিক্ষকরা তাকে না জানিয়ে স্থানীয় ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়ে তার ছেলে গলায় ৩টি সেলাই দিয়ে চিকিৎসা করে তাকে সুস্থ করে মাদ্রাসায় নিয়ে যায়।

সংবাদ সম্মেলনে শহিদুল ইসলাম দাবি করে বলেন, আমার শিশু সন্তান মোঃ আব্দুর রহমান সাবিত ঘটনার সময় ক্লাশে উপস্থিত থেকে কিভাবে তাকে হত্যা করে এবং মাদ্রাসায় চলমান শত শত ছাত্রের মাঝে কি ভাবে একাই হত্যা করলো যাহা কেহ জানতে পারলো না?

তাই আমি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘটনাটির রহস্য উদঘাটন ও অধিকতর তদন্ত দাাবি জানিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি এবং আমার নির্দোষ সন্তানকে মুক্তির দাবি করছি।