স্টাফ রিপোর্টার, অনুসন্ধানবার্তা, বগুড়া:
বগুড়ায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের রেকর্ড রুমে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সংরক্ষিত পুরাতন বেশ কিছু নথিপত্র পুড়ে গেছে। মঙ্গলবার দুপুরে আগুন লাগার পর পরই ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে।
পুড়ে যাওয়া নথির মধ্যে ২০০০ সালের বিভিন্ন থানায় দায়ের করা মামলার নথি এবং ভূমি সংক্রান্ত কিছু খতিয়ান রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কারণে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তবে আগুনে কতগুলো নথি পুড়ে গেছে সেই সম্পর্কে সংশ্লিষ্টরা তাৎক্ষণিকভাবে কোন তথ্য দিতে পারেননি।
বগুড়ার জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, ওই ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি রেভিনিউ) এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের (এডিএম) নেতৃত্বে পৃথক দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এডিসি রেভিনিউয়ের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি ক্ষতিগ্রস্ত নথির তালিকা করবে এবং এডিএমের নেতৃত্বে গঠিত অপর কমিটি পুরো ঘটনা তদন্ত অর্থাৎ অগ্নিকান্ডের কারণ অনুসন্ধানের পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ এবং পুরাতন রেকর্ড রুমটি ব্যবহার যোগ্য কি’না সেটি খতিয়ে দেখবে।
জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুর আনুমানিক পৌণে ৩টায় ডিসি অফিসের নিচতলায় রেকর্ড রুমের ভেতর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে কর্মচারীরা। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হয়।
বগুড়া ফায়ার সার্ভিসের সহকারি পরিচালক মোঃ মঞ্জিল হক জানান, তারা মঙ্গলবার দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে খবর পেয়ে ৫ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনি জানান, রেকর্ড রুমের দরজার ওপরে চিলে কোঠায় রাখা নথিপত্রে আগুন লেগেছিল। সেই আগুন অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ার আগেই তা নিভিয়ে ফেলা হয়। তিনি আরও জানান, আগুনে খুব বেশি নথি পোঁড়েনি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
রেকর্ড রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত এডিসি রেভিনিউ নিলুফা ইয়াছমিন জানান, যেখানে আগুন লেগেছিল সেখানে ২০/২২ বছর আগে আদালত থেকে নিষ্পত্তি করা কিছু মামলার নথি ও ভূমি সংক্রান্ত কিছু খতিয়ান রাখা ছিল। আগুনে অল্প কয়েকটি নথির সামান্য পুড়লেও অধিকাংশই অক্ষত রয়েছে।
বগুড়া জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, অগ্নিকান্ডে কতগুলো নথি পুড়ে গেছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটির তালিকা করার জন্য এডিসি রেভিনিউ নিলুফা ইয়াছমিনের নেতৃত্বে গঠিত ৭ সদস্যের কমিটিকে ৩ কার্য দিবসের মধ্যে অগ্নিকান্ডে পুড়ে যাওয়া কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত নথির তালিকা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে এডিএম মোছাঃ আফসানা ইয়াছমিনের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি অগ্নিকান্ডের কারণ, ভবিষ্যতে এধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ কল্পে করণীয় নির্ধারণ এবং পুরাতন রেকর্ড রুম ব্যবহার যোগ্য কি’না তা খতিয়ে দেখবে।
তিনি আরও জানান, এডিএমের নেতৃত্বে গঠিত কমিটিতে পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, বিদ্যুৎ বিভাগ এবং গণপূর্ত বিভাগের প্রতিনিধিকেও অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। কমিটিকে ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।