কাজিপুরে অনলাইন জুয়ায় নিঃস্ব মানুষ

আবু তৈয়ব সুজয়, কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: অনুসন্ধানবার্তা
সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে ব্যাপকভাবে বেড়েছে অনলাইন জুয়াড় আসর। বিকাশ, রকেট, নগদের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা এজেন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ঢুকানো হচ্ছে। একজন লাভবান হলেও, অন্যরা হতাশায় ভুগছে। যা দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে জানিয়েছে সচেতন মহল। মাদকের নেশার মতোই এই জুয়ার নেশা তরুণ যুব সমাজকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। অনেকেই অনলাইনের এই জুয়ার ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়ে ঋণের দায়ে ঘরবাড়ি ছাড়া। আবার অনেকে এই ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়ে বেছে নিচ্ছে আত্মহত্যার পথ।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কাজিপুর উপজেলার প্রায় সকল ইউনিয়নেই বিশেষ করে সোনামুখী, চালিতাডাঙ্গা, গান্ধাইল, নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নের বেশিরভাগ গ্রাম গুলোতেই দিনে এবং রাতের আধারে উঠতি বয়সী স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে শ্রমজীবী কিংবা চাকরিজীবী সকলেই আসক্ত এই ভয়ংকর নেশায়। অনলাইন জুয়াড় অন্যতম মাধ্যম “ওয়ানএক্সবেট” নামের একটি অনলাইন বেটিং প্ল্যাটফর্ম।

নেশায় ভুক্তভোগী অটো ভ্যান চালক এক তরুণ জানায়, বন্ধুদের মাধ্যমে আসক্ত হয়ে আমিও খেলা শুরু করেছিলাম। কিন্তু লাভের আশা করতে গিয়ে আমি দিশেহারা হয়ে সংসারে অশান্তির সৃষ্টি করেছিলাম। কিন্তু আমি আমার ভূল বুঝতে পেরে আবারও সৎ পথে উপার্জন শুরু করেছি। এখন অনেক ভালো আছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক যুবক বলেন, আমি এবং আমার বউ ঢাকায় ছিলাম গার্মেন্টসে। ঈদের ছুটিতে এলাকায় এসে এই নেশার খপ্পরে পড়ে যাই। পরে আর ঢাকা যাওয়া হয়নি, এই অনলাইন বেটিং এ আসক্ত হয়ে আমি ব্যপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। আমার পরিবারের সাথেও ঝগড়া হয়। সব শেষে আমি অনেক ভেবে চিন্তে এই নেশার পথ থেকে বেড়িয়ে আবারও কাজের সন্ধানে নেমেছি।

এছাড়াও উপজেলার বেশ কিছু গ্রামে রাতে রাস্তায় রাস্তায় গোল হয়ে বসে অফলাইনে বাজি ধরে লুডু, ক্যারাম সহ বেশ কিছু অফলাইন গেমও চলে। এই নেশায় আসক্ত হয়ে উঠছে যুব সমাজ। এতে কায়িক শ্রম কমে গিয়ে বেড়েছে বেকারত্বের হার। যা দেশের জন্য মারাত্নক ক্ষতি।

এবিষয়ে কাজিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শ্যামল কুমার দত্ত (পিপিএম) বলেন, অনলাইন বেটিং বর্তমান প্রেক্ষাপটে ব্যপক আলোচিত একটি অপরাধ। এই বিষয়গুলোকে আমরা নজরদারিতে রেখেছি। উপযুক্ত প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।