বগুড়ায় যমুনার ভাঙনে অর্ধশত বসতভিটা বিলীন

স্টাফ রিপোর্টার, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ার সারিয়াকান্দীর উপজেলার ইছামারা গ্রামে যমুনার ভাঙনে মাত্র ৩০ মিনিটেই অর্ধশত বসতভিটা বাড়ী নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) দুপুর ২টা থেকে যমুনার ভাঙনে শুরু হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সারিয়াকান্দী উপজেলার কামালপুর ইউনিয়নের ইছামারা, টিটুরমোড়, ফকিরপাড়া, খোকার মোড় বর্ষার প্রথম থেকেই হুমকির মুখে পড়ে। সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙ্গনরোধে জিও ব্যাগ দিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করে আসছিল। কয়েক দিন হলো যমুনার পানি ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙ্গন আরও তীব্র হয়ে উঠে।

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় ইছামারা পয়েন্টে ভাঙ্গন শুরু হলে মূহুর্তেই বিধবা স্বপ্না বেওয়া, রবিন মিয়া, হাওয়া বেগম, আব্দুল বাছেদের বাড়ী সহ প্রায় অর্ধশত বসত বাড়ী, গাছপালা, জিনিস পত্র যমুনায় ভেসে চলে যায়। এছাড়া পানিতে ভেসে গেছে গবাদী পশুসহ হাঁস- মুরগীও। ভাঙ্গন শুরু হওয়ার পর ইছামারা গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। লোকজন গবাদি পশু, জিনিস পত্র নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটতে থাকে।

বিধবা স্বপ্না বেওয়া অনেকটা পাগলের মত প্রলাপ করে বলেন, কিছুই নেই তার আর। দুটি ঘর, কাপড়, কাথা-বালিশ, হাঁস-মুরগি সবই ভেসে গেছে।

দিনমজুর আব্দুল বাছেদ জানান, এখন কোথায় গিয়ে স্ত্রী-কন্যা নিয়ে উঠবে তার ঠিকানা নেই। দু’টি ঘর জিনিসপত্র সবই কেড়ে নিয়েছে রাক্ষুসে যমুনা নদী। গরু-ছাগল কোথায় গেছে তাও জানেনা আব্দুল বাছেদ।

ইছামারা গ্রামের রেজাউল জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদাররা কাজ শুরু করলেও, কাজের কোন গতি ছিল না। ধীর গতিতে কাজ করেছে। প্রথম থেকে দ্রুত কাজ করলে এমনটি হতো না। রেজাউল আরও জানায়, মাত্র ৩০ মিটিটে ভাঙ্গনের তাণ্ডব দেখে হতবাক হয়ে গেছি।

তবে এবিষয়ে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ন কবির জানান, বর্ষার শুরু থেকেই কামালপুর ইউনিয়নের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৪টি ঝুকিপূর্ণ জায়গায় ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজ শুরু হয়। কিন্তু কয়েক দিনে যমুনায় পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। বৃহস্পতিবার যমুনার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। হঠাৎ করেই তীব্র স্রোত ও ঘূর্নাবর্তে ইছামারা গ্রামের অনেক বাড়ীঘর, জিনিসপত্র যমুনায় ভেসে যায়। সেখানে ঠিকাদাররা কাজ অব্যহত রেখেছে।