জেমস আব্দুর রহিম রানা, অনুসন্ধানবার্তা:
রাজনৈতিক পদ-পদবি কারণে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিহত যুবলীগ নেতার বাবা সাহাবুল ইসলাম। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) নিজ বাড়িতে কান্না জড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১০টার দিকে অভয়নগরের সরদারপাড়ায় নিজের বাড়ি থেকে দেড়শ গজ দূরে রাস্তায় নৃশংসভাবে যুবলীগ নেতা মুরদা হোসেনকে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। মুরাদ হোসেন ওই এলাকার সাহাবুল ইসলামের ছেলে। তিনি নওয়াপাড়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।
নিহত মুরাদের ভাই বিএম ফরহাদ বলেন, আমি ঘরে ভাত খাচ্ছিলাম। হঠাৎ চিৎকার শুনে বাড়ির বাইরে রাস্তায় বের হয়ে দেখি আমার ভাইয়ের হাত কেটে ফেলেছে, পা কেটে ফেলেছে, পেটে কুপিয়ে নাড়িভুড়ি বের করে ফেলে রেখে চলে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আমার ভাই রবিন অধিকারী বেচার সঙ্গে চলাফেরা করতো। তাছাড়া যুবলীগের পদ-পদবী নিয়ে এলাকার কিছু সন্ত্রাসীদের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল। আমার ভাই নওয়াপাড়া বন্দরের একটি ঘাটের সরদার। ওর উপর এর আগেও দুইবার হামলা হয়েছে। এলাকার কিছু সন্ত্রাসীরা কিছুদিন আগে প্রকাশ্যে ওকে হত্যা করার হুমকিও দেয়। রবিবার রাত ১০টার দিকে মুরাদ বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিল সুরাদ। এমন সময় রাস্তায় আমার ভাইকে একা পেয়ে এলাকার কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।
সোমবার সকালে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির উঠানে বসে বুকফাটা আহাজারি করছেন নিহত যুবলীগ নেতা মুরাদ হোসেনের বড় বোন লিলিমা বেগম। পাশেই বসে অঝরে কাঁদছিলেন নিহতের বাবা বৃদ্ধ সাহাবুল ইসলাম। দাদার কোলে বসে নির্বাক হয়ে মায়ের কান্নাঝরা মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছে মুরাদ হোসেনের তিন মাস বয়সী শিশু। তৃতীয় শ্রেণীতে পড়া বড় ছেলেও মায়ের বুকে মাথা দিয়ে কেঁদেই যাচ্ছে। গোটা এলাকা জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
নিহতের বড় বোন লিলিমা বেগম বলেন, আমার ভাই অ্যাম্বুলেন্সেই মরার আগে সবার নাম বলে গেছে। কারা কারা ওরে মেরেছে সবকিছু বলে গেছে। ওরা চৌদ্দ জন মিলে আমার ভাইকে মেরেছে। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।
তিনি বলেন, মুরদাকে এখান থেকে আহত অবস্থায় প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখান থেকে খুলনায় নেওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যেই তিনি মারা যান।
নিহতের বাবা সাহাবুল ইসলান বলেন, রাজনৈতিক পদ-পদবি কারণে আমার ছেলেটাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো। আমার ছেলের কাছে এই এলাকার কেউ বিপদে পড়ে এসে কোনোদিন ফিরে যায়নি। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাই।
এবিষয়ে অভয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আকিকুল ইসলাম জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ বা মামলা করা হয়নি। এবিষয়ে তদন্ত চলছে।