![Farmers hold press conference to escape harassment of accused in human trafficking case_Dhunat_belkuchi ধুনটে মানব পাচার মামলার আসামীর হয়রানি থেকে বাঁচতে কৃষকদের সংবাদ সম্মেলন](https://i0.wp.com/onusondhanbarta.com/wp-content/uploads/2024/04/Farmers-hold-press-conference-to-escape-harassment-of-accused-in-human-trafficking-case_Dhunat_belkuchi.jpg?resize=696%2C392&ssl=1)
স্টাফ রিপোর্টার, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ার ধুনটে মানব পাচার মামলার প্রভাবশালী আসামীর হয়রানি থেকে বাঁচতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ৫ জন দরিদ্র কৃষক। বুধবার রাতে ধুনট মডেল প্রেসক্লাবে লিখিত সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন চান্দিয়ার গ্রামের মৃত আহম্মদ আলীর ছেলে কৃষক আজম আলী (৬৫), বেলকুচি গ্রামের মৃত এলাহী বক্সের ছেলে কৃষক গোলাম মওলা (৬৫), একই গ্রামের মৃত আজাহার আলীর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (৩৮), মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে নুরুল ইসলাম (৫০) ও মৃত ওয়াহেদ আলী মন্ডলের ছেলে হায়দার আলী (৬৫)।
লিখিত সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, ধুনট সদর ইউনিয়নের মাটিকোড়া গ্রামের মৃত আশাদুল ইসলামের মেয়ে আয়শা খাতুন (১৬) বেলকুচি গ্রামের তার নানা মৃত কপিল উদ্দিনের বাড়িতে নানী আছিয়া বেগমের সঙ্গে বসবাস করে। আয়শা খাতুনের স্বামী গার্মেন্টেসে চাকুরি করে। আয়শা গর্ভবর্তী হলে গত বছরের ২৮ নভেম্বর তার প্রতিবেশি নানা বেলকুচি গ্রামের রমজান আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম শাহীন (৫০) তাকে শেরপুর উপজেলার মাহবুব ক্লিনিকে নিয়ে যায়। এরপর সিজারের মাধ্যমে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন আয়শা। পরবর্তীতে কিছু কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় শিশুটিকে এক লাখ বিক্রি করে দেন আয়শার প্রতিবেশি নানা রফিকুল ইসলাম শাহীন।
এঘটনায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারী আয়শা বাদী হয়ে বেলুকচি গ্রামের রমজান আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম শাহীন সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে ধুনট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষক আজম আলী, গোলাম মওলা, আব্দুর রাজ্জাক, নুরুল ইসলাম ও হয়দার আলী বলেন, আয়শার মামলা দায়েরের পর টিভি সাংবাদিকরা গ্রামে এসে আমাদের সাক্ষাৎকার নেন এবং টিভিতে প্রচার করে। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে মানব পাচার মামলার আসামী রফিকুল ইসলাম শাহীন আমাদের হয়রানি করতে গত ১৭ ফেব্রুয়ারী ধুনট থানায় মিথ্যা এবং বানোয়াট অভিযোগ দায়ের করেন। রফিকুল ইসলাম শাহীন তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, ‘আমরা নাকি তার জমি দখলের পায়তারা করছি এবং তাকে নাকি আমরা হুমকিও দিয়েছি’। আর এই অভিযোগটির কোন প্রকার তদন্ত না করেই ধুনট থানার এসআই শাহ আলম আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট প্রতিবেদন লিখে বিজ্ঞ আদালতে নন এফআইআর প্রসিকিউশন দাখিল করেন।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) ওই মামলায় আমরা আদালতে হাজিরা দিলে বিচারক মামলাটি খারিজ করে দেন। এদিকে মিথ্যা মামলাটি খারিজ হওয়ার পর আমরা বাড়িতে ফিরলে বুধবার সন্ধ্যায় রফিকুল ইসলাম শাহীন বেলুকচি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের মাঠে আমাদেরকে হামলার চেষ্টা চালায়। রফিকুল ইসলাম শাহীনের বিরুদ্ধে মানব পাচার মামলা সহ একাধিক মামলা থাকলেও তিনি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং অজ্ঞাত কারনে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না। তাই আমরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাকে গ্রেফতার সহ তার হয়রানি থেকে বাঁচতে প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
তবে সরেজমিন তদন্ত ছাড়াই কেন আদালতে মিথ্যা ও বানোয়াট প্রতিবেদন দাখিল করলেন এবিষয়ে ধুনট থানার এসআই শাহ আলম বলেন, আমি কয়েক বার সেখানে গিয়েছিলাম এবং সবার সাথে কথা বলেই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছি। তবে একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির জমি দখলের পায়তারা কি এসব গরীব কৃষকেরা সত্যিই করেছিল কিনা; এবিষয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আইন আইনের গতিতেই চলে।
তবে মানব পাচার মামলার আসামী গ্রেফতারের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা ধুনট থানার এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ওই মামলায় এখনও কোন আসামী জামিন নেয়নি। আমরা তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। তবে আসামীরা প্রকাশ্যে কিভাবে ঘুরে বেড়িয়ে সাক্ষীদের হুমকি দিচ্ছে এবিষয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আমাকে কেউ অবগত করলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবিষয়ে ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈকত হাসান বলেন, আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে এবং সাক্ষীদের হয়রানির বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।