সাজু মিয়া, শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি: অনুসন্ধানবার্তা
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার পিরব ইউনাইটেড ডিগ্রী কলেজ সিহালী অধ্যক্ষ পদ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে দুইদিন ধরে ক্লাস বর্জন এবং অধ্যক্ষর কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ।
জানা যায়, পিরব ইউনাইটেড ডিগ্রী কলেজ সিহালীতে গত এক বছর পূর্বে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দায়িত্বে ছিলেন মাহবুবুর রশিদ। তিনি দায়িত্ব থাকালীন ওই কলেজের সভাপতি ছিলেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল করিম। সাবেক চেয়ারম্যানের সভাপতির দায়িত্ব শেষ প্রান্তে তার মন মত ওই কলেজের শিক্ষক নাছিমা আক্তারকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব প্রদান করেন। তিনি দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পর থেকেই শুরু হয় কলেজে অধ্যক্ষ পদ নিয়ে পক্ষ পাতিত্ব। অধ্যক্ষ পদ ঘিরে শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে দ্বন্দ্বের রূপ নেয়। গত রোববার সকালে ওই কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা ক্লাস বর্জন করে। একপর্যায়ে তারা অধ্যক্ষর রুমে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে কলেজ চত্বরে অধ্যক্ষের অপসারণের দাবীতে বিক্ষোভ করতে থাকে।
সোমবার সকালে ওই কলেজে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষক-কর্মচারীরা ক্লাস বর্জন করে কলেজের শহীদ মিনার চত্বরে বিক্ষোভ করছে। বিক্ষোভকারীরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকের অপসারণসহ বিভিন্ন অনিয়নের কথা তুলে ধরে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে।
বিক্ষোভকারী শিক্ষক প্রতিনিধি ও সহকারী অধ্যক্ষ মকবুল হোসেন বলেন, সাবেক সভাপতি তার দূর্নীতি ঢাকতে কমিটির মেয়াদ শেষে তার মনোনিত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাছিমা কে দিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি লংঘন করে তার স্ত্রী ও শ্যালকের নাম জাতীয় বিশ্বদ্যিালয়ে নতুন কমিটি ( পকেট কমিটি) করার জন্য নাম পাঠান। কিন্তু তার চক্রান্ত সফল হয় না। শুধু তাই নয়, সাবেক কমিটি কলেজের উন্নয়ন জন্য ৫জনকে ৪র্থ শ্রেণির পদে নিয়োগ দিয়ে প্রায় কোটি টাকা নিয়োগ বাণিজ্য করেছে। এটা ঢাকতেই এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন।
আনন্দোলনরত শিক্ষক তাজুল ইসলাম, আব্দুল করিম, আব্দুল মতিন, নুহুরুল হক রুবেল বলেন, সাবেক সভাপতি এই কলেজের পদোন্নতি পাওয়া আট জন শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বন্ধ করে রাখে এবং মোটা অংকের টাকা দাবী করেন। কোন শিক্ষক প্রতিবাদ করলেও তাকে শো-কোজসহ সাময়িক বরাখস্ত করে রেখেছেন তিনি। যাতে তার বিরুদ্ধে কেহ কোন কথা না বলেন।
ওই কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী লাবনী আক্তার আনিকা, মারুফ, জিহাদ বলেন, দুই দিন যাবৎ স্যাররা ক্লাস বর্জন করে রেখেছেন। আমাদের ক্লাস না হওয়ায় আমরা বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসলে আমরা পুনরায় কলেজে আসবো।
এবিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাছিমা বলেন, সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাহবুবর রশিদ তিনি দায়িত্ব থাকাকালীন সময় পাঁচটি নিয়োগের টাকা আত্মসাৎ করে অন্য কলেজে যোগদান করেছেন। আমার কক্ষে তালা ঝুলানো হয়েছে বলে আমি জেনেছি। তিনি বলেন, আমার সময়ে কলেজের উন্নয়ন মূলক কাজ করা হয়েছে। যা বিগত অধ্যক্ষের সময়ে হয়নি। তবে সাবেক অধ্যক্ষ আমাকে ফাঁসিয়ে গেছেন। তবে কলেজে যাওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি হলে আমি কর্মস্থলে যাবো। আমি আশা করি যারা আনন্দোলন করছেন তারা ক্লাসে ফিরে যাওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করবেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পিরব ইউনাইটেড ডিগ্রী কলেজ সিহালী কলেজের সভাপতি তাহমিনা আক্তার বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। তবে শিক্ষার পরিবেশ অচিরেই ফিরে আনা হবে।