ধুনটে জলাশয় দখল নিয়ে আ’লীগ-বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষ

ইমরান হোসেন ইমন, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ার ধুনটে সরকারি জলাশয় দখল নিয়ে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ী ইউনিয়নের রুদ্রবাড়িয়া ও মথুরাপুর ইউনিয়নের পীরহাটি মৌজার অন্ধ পুকুরপাড় নামক সরকারি জলাশয়ে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে আহতারা হলো- রুদ্রবাড়িয়া গ্রামের ওয়াজেদ আলী খন্দকারের ছেলে বগুড়া জেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য মামুন খন্দকার (৩৩), পায়েল খন্দকার (২৭), মৃত কালাচানের ছেলে রায়হান (৩৮), আব্দুল আজিজের ছেলে ইকন (৩০), ওসমান গনির ছেলে আলামিন (৩২), দুদু খন্দকারের ছেলে নজরুল ইসলাম (৫৫), আব্দুল আজিজ খন্দকার (৫২), নজরুল ইসলামের ছেলে বাদল খন্দকার (৩২), আছাব উদ্দিনের ছেলে ওয়াজেদ আলী খন্দকার (৭০)।

আহতদের মধ্যে ইকন ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও আলামিন বগুড়া পপুলার ক্লিনিকে এবং অন্যরা বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

এছাড়া অপর পক্ষের আহতরা হলেন, পীরহাটি গ্রামের গোলাম রব্বানীর ছেলে মথুরাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক টুটুল মাহমুদ (৩৮), আব্দুস ছালামের ছেলে লাল চাঁন (৩০), আবু তাহেরের ছেলে আকরাম হোসেন (৩০), মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে ফরহাদ (৩৯), জরিফের ছেলে কামরুজ্জামান ঠান্ডু (৫০), নাহের আলীর ছেলে মোহারম (৪০) ও কামরুজ্জামান ঠান্ডুর বোন স্বপ্না খাতুন (৩৫)। তারাও বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ী ইউনিয়নের রুদ্রবাড়িয়া ও মথুরাপুর ইউনিয়নের পীরহাটি মৌজার ৬ একর ৪৪ শতাংশের অন্ধপুকুর নামে সরকারি জলাশয়টি নিয়ে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি সমর্থিতদের দু’পক্ষের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। উভয়পক্ষই জলাশয়টি নিজেদের বলে দাবি করে। এ নিয়ে আদালতে দুই পক্ষের মধ্যেই একাধিক মামলাও চলমান রয়েছে।

এদিকে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে রুদ্রবাড়িয়া ও পীরহাটি মৌজার মাঝখানে অবস্থিত ওই জলাশয়টিতে মথুরাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক টুটুল গ্রুপ মাছ ধরতে গেলে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য মামুন গ্রুপ এতে বাধা দেয়।

পরে দু’পক্ষের মধ্যে একপর্যায়ে হামলা, পাল্টা হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুু’পক্ষের অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন। তন্মধ্যে ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা টুটুল গ্রুপের ফোরহাদ নামের একজন এবং জেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য মামুন গ্রুপের পায়েল খন্দকার নামের আরেক যুবকের অবস্থাও আশংকাজনক। আহতদের ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

তবে স্থানীয়রা জানান, গত ৫ই আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পরই সরকারি ইজারাকৃত বিভিন্ন জলাশয় সহ অবৈধ বালু পয়েন্টগুলো দখলে নেয় বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের কথিত নেতারা।

তবে এসব বিষয়ে ধুনট উপজেলা বিএনপির সভাপতি একেএম তৌহিদুল আলম মামুন বলেন, বিএনপির নাম ব্যবহার করে যদি কেউ অনৈতিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত এবং দলীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এবিষয়ে ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইদুল আলম বলেন, সরকারি জলাশয় নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত চলছে। এবিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।