স্টাফ রিপোর্টার, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়া-৩ আসনে জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম তালুকদার, তার ছেলে মারুফ ইসলাম প্রিন্স ও দুপচাঁচিয়া থানার সাবেক এএসআই শাফায়েতসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। মোবাইল ফোন চুরির অপবাদে ছেলে রবিন প্রামানিককে (১৭) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে তার মা রওশন বিবি সোমবার বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। এবিষয়ে দুপচাঁচিয়া থানার ওসি (তদন্ত) নাসিরুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত আদালতের কোন কাগজ আসেনি।
তবে মামলার নথি সূত্রে জানায়, নিহত রবিন প্রামানিক বগুড়া দুপচাঁচিয়া উপজেলার জয়পুর দক্ষিণপাড়ার আবদুর রাজ্জাকের ছেলে। রবিন স্থানীয় ডিমশহর উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে লেখাপড়ার পাশাপাশি রিকশা ভ্যান চালাতেন। গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৩ (আদমদীঘি-দুপচাঁচিয়া) আসনে জাপা নেতা সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম তালুকদার প্রার্থী হন। রবিন প্রামানিক প্রধান আসামি নুরুল ইসলাম তালুকদারের বিপক্ষে অন্য প্রার্থীর জন্য কাজ করেন। এতে নুরুল ইসলাম তালুকদার তার উপর ক্ষিপ্ত হন। গত ২০২৩ সালের ১৫ আগষ্ট সাবেক এমপির ছেলে মারুফ ইসলাম প্রিন্স অন্যান্য আসামিদের সহযোগিতায়
ভিকটিম রবিনকে দুপচাঁচিয়া উপজেলায় একটি ভাড়া বাসায় ডেকে নেন। তাকে মোবাইল ফোন চুরির অপবাদ দিয়ে এসএস পাইপ দিয়ে এলোপাথারি মারপিট করে গুরুতর আহত করেন।
এ সময় মা রওশন বিবি ও অন্যরা মুমুর্ষ অবস্থায় রবিনকে উদ্ধার করে দুপচাঁচিয়া থানায় যান। থানার এএসআই শাফায়েত তাদের অভিযোগ আমলে না নিয়ে উল্টো বাদীকে একটি কক্ষে আটকিয়ে রাখেন। পরে তারা মুমুর্ষ রবিনকে দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সংসারে দরিদ্রতার কারণে চিকিৎসা করাতে না পারলে হাসপাতাল থেকে রবিনকে রিলিজ দেওয়া হয়। বাড়িতে আবারো অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি গত বছরের ২৩ আগস্ট মারা যান।
এদিকে ঘটনার ১৪ মাস পর গত সোমবার নিহতের মা রওশন বিবি বগুড়ার সিনিয়র জুডির্শিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দুপচাঁচিয়া আদালতে সাবেক এমপি, তার ছেলে, পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১০ জনের নামে হত্যা মামলা করেন।