ইমরান হোসেন ইমন, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ার ধুনটে জ্বীন হাজির করেও মেলেনি বাঙ্গালী নদীতে নিখোঁজ গৃহবধূ আয়শা খাতুনের কোন সন্ধান। তবে কুসংস্কার আধুনিক সমাজ বিশ্বাস না করলেও গ্রামাঞ্চলের কিছু সমাজ কখনো কখনো এটাও বিশ্বাস করেন মৃত মানুষও ফিরে আসবে। এমন বিশ্বাস স্থাপন করে জ্বীন হাজিরের পূর্বে নদীতে ৭টি দেশী মুরগির ডিম, এক লিটার গরুর দুধ ও নদীর তীরে গর্ত করে গোবর পুতে রাখেন নিখোঁজের পরিবার। কিন্তু কবিরাজের এমন অদ্ভুত কর্মকাণ্ডের পরও সন্ধান মেলেনি গৃহবধূ আয়শা খাতুনের।
ধুনট উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের বিলচাপড়ী গ্রামের দক্ষিণপাড়া এলাকার আবু বক্কারের স্ত্রী আয়শা খাতুন গত সোমবার বাড়ির পাশে বাঙ্গালী নদীতে গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজ হন। এরপর তার পরিবার অনেক খোঁজাখুজির পর কোন সন্ধান না পেয়ে ধুনট ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। পরে ফয়ার সাভিসের ডুবরিদল সোমবার সকাল ১১টা থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত নদীতে উদ্ধার অভিযান চালিয়েও ব্যর্থ হয়ে চলে যান। এরপরই সেখানে কবিরাজ বেশে হাজির হন ধুনট উপজেলার নিমগাছী ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম নামের এক কবিরাজ।
ওই কবিরাজ ভুক্তভোগি পরিবারকে নদীতে ৭টি দেশী মুরগির ডিম, এক লিটার গরুর দুধ ও নদীর তীরে গর্ত করে গোবর পুতে রাখতে বলেন। ওই কবিরাজের প্রতি বিশ্বাস রেখে হুব হুব কাজ করেন তারা। তখন এমন দৃশ্য দেখতে নদী তীরে হাজারো মানুষ ভীড় জমায়।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হামিদ জানান, কবিরাজ রফিকুল তার সঙ্গে নিয়ে আসা এক নারীর উপর জ্বীন হাজির করান। এরপর ওই নারী বলে তাকে (নিখোঁজ নারী) আরো দুই দিন পর নদী থেকে ভাসিয়ে তোলা হবে। এরপরই ওই কবিরাজ তার পারিশ্রমিক নিয়ে চলে যান এবং বলে যান আয়শাকে দুই দিন পর পাওয়া যাবে। কিন্তু মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত খুজেও তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।
তবে এবিষয়ে ধুনট ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ হামিদুল ইসলাম জানান, রাজশাহী থেকে ডুবরি নিয়ে এসে সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ধুনটের বিলচাপড়ী বাঙ্গালী নদীতে নিখোঁজের সন্ধান করা হয়, কিন্তু তারপরও তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।