স্টাফ রিপোর্টার, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ার ধুনটে ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব নাজমুস শোয়েব এর বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, বসতবাড়ির জায়গা দখল, রাস্তা বন্ধ সহ বিভিন্ন অনিয়ম, দূর্র্ণীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে মিথ্যা মামলায় হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে শতাধিক ছাত্র-জনতা ।
মঙ্গলবার দুপুুরে ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ী ইউনিয়নের বিশ্বহরিগাছা গ্রামের পাকা সড়কে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন কর্মসূচিতে ভুক্তভোগিরা ওই উপসচিবের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা সহ তাকে অপসারণের দাবি জানান।
মানবন্ধন কর্মসূচিতে বগুড়া জজ কোর্টের অতিরিক্ত পিপি এ্যাডভোকেট রেজানুর ইসলাম খান রেজা বলেন, বিশ্বহরিগাছা গ্রামের বাসিন্দা ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব সেটেলমেন্ট অফিসার নাজমুস শোয়েব এলাকায় একটি মসজিদ নির্মান করেন। কিন্তু গ্রামবাসীকে তিনি ওই মসজিদে নামাজ পড়তে দেন না। একারনে গ্রামবাসী পাশেই আরেকটি মসজিদ নির্মান করে সেখানে নামাজ আদায় করে আসছেন। একারনে উপ-সচিব নাজমুস শোয়েব আওয়ামীলীগ সরকারের সময় ক্ষমতার অপব্যবহার করে গ্রামবাসীর চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি বন্ধ করে দেন। এছাড়া তিনি মসজিদ ও মাদ্রাসায় নিয়োগ দেওয়ার নামে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে কাউকেই চাকরি দিতে পারেননি। শুধুমাত্র তার ব্যক্তিগত অর্থায়নে নির্মিত মসজিদে নামাজ না পড়ার কারনে নিরীহ গ্রামবাসীকে মিথ্যা মামলায় জেলও খাটিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তার এসব অনৈতিক কর্মকান্ডকে সমর্থন না করায় স্বনামধন্য দুই শিক্ষককে আওয়ামী সরকারের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নির্বাহী আদেশে বদলীও করিয়েছেন। সর্বশেষ গত ১৪ ডিসেম্বর উপ-সচিব নাজমুস শোয়েব গ্রামের বাড়িতে এসে আওয়ামী ক্যাডারদের দিয়ে তার মসজিদে নামাজ না পড়া মুসল্লিদের উপর হামলা চালিয়ে কয়েকজনকে আহত করে। একারনে বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা তাকে মসজিদে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে ধুনট থানা পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করেন।
এ্যাডভোকেট রেজানুর ইসলাম খান আরো বলেন, আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলেও উপ-সচিব নাজমুস শোয়েব এখনও ক্ষমতার অপব্যবহার করে গ্রামের নিরীহ মানুষদের মিথ্যা মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে হয়রানি করে আসছেন। তার এসব অনিয়ম, দূর্র্ণীতি ও হয়রানির প্রতিবাদে বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা উপ-সচিব নাজমুস শোয়েবের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা সহ তাকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।
এবিষয়ে চান্দিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমরুল কায়েস খান বলেন, শুধুমাত্র গ্রামবাসীর পক্ষে কথা বলার কারনে উপ-সচিব নাজমুস শোয়েব ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাকে ও আমার বোনকে অন্যত্র বদলী করেছেন। আওয়ামী সরকারের সময় তিনি অনিয়ন ও দূর্ণীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন। ঢাকায় তার একাধিক ফ্লাট, বাসাবাড়ি, জমিজমা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। ইতিমধ্যেই তার এসব অনিয়ম ও দূর্র্ণীতির বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক, ভূমি মন্ত্রণালয় ও বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন দপ্তরের লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।