ধুনটে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যুবলীগ নেতার বালু উত্তোলন

স্টাফ রিপোর্টার, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ার ধুনটে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আবারো যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলন করছেন যুবলীগ নেতা ও তার সহযোগিরা। যমুনার বাঁধ ও তীরবর্তী এলাকা থেকে ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে বালু উত্তোলনের কারনে ফসলি জমিসহ বাড়ি-ঘর বিলীন হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। একারনে বালু উত্তোলন বন্ধে ওই এলাকার সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি আদালতের নিষেধাজ্ঞা চেয়ে রিট করেন। পরে আদালত বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমলে নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

জানাগেছে, ২০২৩ সালের জুনে ৫৭ লাখ টাকায় ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের যমুনা নদীর চৌবেড় মৌজার ৩৯ জমিতে বালু মহাল ইজারা নেন ধুনট উপজেলা যুবলীগের ত্রান বিষয়ক সম্পাদক বেলাল হোসেন। কিন্তু বেলাল হোসেন নির্দিষ্ট জায়গা থেকে বালু উত্তোলন না করে সারিয়াকান্দি উপজেলার বোহাইল, আওলাকান্দী এবং ধুনট উপজেলার শহড়াবাড়ী, শিমুলবাড়ী, ভান্ডারবাড়ী, বৈশাখী, কৈয়াগাড়ী ও ভুতবাড়ী গ্রামের যমুনা নদীর তীর সংরক্ষন এলাকা থেকে বালু উত্তোলন শুরু করেন।

এদিকে গত ৫ আগষ্টের পর গোসাইবাড়ী এবং ভান্ডারবাড়ী এলাকার আরো কিছু লোকজনকে সাথে নিয়ে অবৈধ ভাবে নির্দিষ্ট জায়গার পরিবর্তে যমুনা নদীর বিভিন্ন স্থানে ইচ্ছামত বালু উত্তোলন করছেন যুবলীগ নেতা বেলাল হোসেন। নদী থেকে বালু উত্তোলন করে শহড়াবাড়ী ঘাটের একাধিক স্থানে মজুদের পাশাপাশি সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার ঢেকুরিয়া এবং টাঙ্গাইলের ভূয়াপুর, জামালপুরের তারাকান্দী ও সরিষাবাড়ীতের নৌযোগে বিক্রি করছেন তিনি।

এদিকে বালু উত্তোলনের ফলে শহড়াবাড়ী খেয়াঘাটের পাশের চরসহ শিমুলবাড়ীতে জেগে উঠা চরও যমুনায় বিলিন হয়েছে। শহড়াবাড়ী ঘাট থেকে অতিরিক্ত বালু বোঝাই ট্রাক চলাচল করায় কয়েক কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত শহড়াবাড়ী থেকে ধুনট উপজেলা পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙ্গে চলাচল অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। এসব বিষয়ে বিভিন্ন সময় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ ও মানববন্ধন করেও কোন প্রতিকার পায়নি যমুনার তীরবর্তী এলাকার মানুষেরা।

এবিষয়ে শিমুলবাড়ী গ্রামের আজিজার রহমান জানান, দিন ও রাতে ২০ থেকে ৩০টি বড় ড্রেজার চালিত নৌকা দিয়ে পাইপের সাহায্যে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। সেই বালু পাশের কাজিপুর উপজেলার ঢেকুরিয়াসহ টাঙ্গাইল জেলার ভূয়াপুর, জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী, তারাকান্দীতে নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। যততত্র বালু উত্তোলনের ফলে যমুনার পশ্চিম পাড়ের শিমুলবাড়ী, বানিয়াজান, শহড়াবাড়ীসহ কয়েকটি গ্রাম এখন হুমকির মুখে পড়েছে।

আদালতে রিটকারী সাইফুল ইসলাম জানান, গত ডিসেম্বরে বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য আদালতে রিট করা হয়। স্থগিতাদেশের অনুলিপি জেলা প্রশাসক, ধুনট নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ধুনট থানায় দেয়া হলেও বালু উত্তোলন এখনও বন্ধ হয়নি।

এব্যাপারে ধুনট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খ্রিষ্টফার হিমেল রিছিল বলেন, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।