ধুনটের আদিবাসী গৃহকর্মীকে ৯ বছর ধরে নির্যাতন, যেভাবে মিলল মুক্তি!
বগুড়ার ধুনটে গৃহকর্তার নির্যাতনের ক্ষত চিহ্ন নিয়ে বাড়ি ফিরেছে আদিবাসী গৃহকর্মী প্রিয়া রানী (১৯)। -অনুসন্ধানবার্তা

স্টাফ রিপোর্টার, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ার ধুনটের আদিবাসী এক গৃহকর্মীকে দীর্ঘ ৯ বছর ধরে ঘরে আটকে রেখে অমানুষিকভাবে শারীরিক নির্যাতন করেছে এক দম্পত্তি। এমন কি মেয়েটিকে পরিবারের কারো সঙ্গে দেখা করতেও দেওয়া হয়নি দীর্ঘ ৯টি বছর। মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে অবশেষে গৃহকর্তার বাড়ি থেকে মুক্তি মিলেছে ওই গৃহকর্মীর। এছাড়া তাকে দেওয়া হয়নি দীর্ঘ বছরের পারিশ্রমিকও।

ওই গৃহকর্মীর নাম কুমারী প্রিয়া রানী (১৯)। সে ধুনট সদর ইউনিয়নের কুঠিবাড়ি গ্রামের আদিবাসী বাগদি সম্প্রদায়ের বিমল চন্দ্র রায়ের মেয়ে। বিমল চন্দ্রের এক ছেলে ও এক মেয়ে। তাই দারিদ্রতার কারনে ১০ বছর বয়সেই গৃহকর্মীর কাজ করতে অন্যের বাসায় পাঠাতে হয় তার পরিবারকে। ধুনট হাসপাতাল মোড় এলাকার মৃত বিশা সাহার ছেলে সন্তেশ সাহা তখন বিমল চন্দ্র রায়ের মেয়ে প্রিয়া রানীকে কাজের মেয়ে হিসেবে ঢাকায় তার মেয়ের বাড়িতে পাঠায়। এরপর থেকেই মেয়েটিকে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেয়নি সন্তেশ সাহার মেয়ে মালা রানী ও জামাই সুদেব সাহা। দীর্ঘ ৯টি বছরে মেয়েটির উপর চালানো হয়েছে শারীরিক নির্যাতন।

গৃহকর্তার নির্যাতনের বর্ণনা করতে গিয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে প্রিয়া রানী বলেন, ঢাকার আব্দুল্লাহপুর এলাকার একটি বাসায় বন্দি হিসেবে থাকতাম। তারা বাড়ির বাহিরে গেলে মাঝেমধ্যে বাথরুমে আটকে রেখে তালা দিয়ে যেত। সারাদিনরাত কাজ করাতো, ঠিকমতো খেতে দিত না। কিছু ভুল হলেই নির্যাতন চালাতো।

প্রিয়া রানীর বাবা বিমল চন্দ্র বলেন, দীর্ঘ বছরেও মেয়েকে দেখতে না পেয়ে ঢাকার স্থানীয়দের মাধ্যমে ফাঁকা কাগজে স্বাক্ষর দিয়ে দুই দিন আগে আমার মেয়েকে বন্দিদশা থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে এসে ধুনট হাসপাতালে ভর্তি করি। আমার মেয়ের সারা শরীরে অসংখ্য নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। এঘটনায় সোমবার ধুনট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

এবিষয়ে ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইদুল আলম বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।