ধুনটে গৃহবধুকে নির্যাতনের অভিযোগ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে

স্টাফ রিপোর্টার, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ার ধুনটে জমি বন্ধকের টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে বাসায় ডেকে নিয়ে সুইটি খাতুন (৩২) নামে এক গৃহবধুকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। নির্যাতনের শিকার সুইটি খাতুন বর্তমানে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। এঘটনায় বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ওই গৃহবধু বাদী হয়ে তিন শিক্ষক সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগসূত্রে জানাগেছে, কয়েক বছর আগে চিকাশী ইউনিয়নের হটিয়ারপাড়া এলাকার ডা: শফিকুল ইসলামের স্ত্রী সুইটি খাতুন একই গ্রামের মৃত ভরসা আকন্দের ছেলে হাফিজুর রহমানের মালিকানাধীন ৩৩ শতক জমি ২ লাখ টাকায় বন্ধক নিয়ে চাষাবাদ করে আসছেন। এদিকে কিছু দিন আগে ওই জমিটি বিক্রির প্রস্তাব করলে সুইটি খাতুন জমিটি কেনার জন্য আরো ২ লাখ টাকা বায়না দেন এবং স্ট্যাম্পের উপর লিখে নেন।

কিন্তু জমির মালিক হাফিজুর রহমান জমিটি সুইটি খাতুনের কাছে বিক্রি না করে এই গ্রামের এমদাদ আলীর ছেলে বড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আশাদুল ইসলামের কাছে বিক্রি করেন। এই সংবাদ পেয়ে সুইটি খাতুন জমির মালিক হাফিজুরকে পাওনা ৪ লাখ টাকা ফেরত দিতে বললে, তিনি বলেন, জমির ক্রেতা শিক্ষক আশাদুল তাকে টাকা ফেরত দিবেন’।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল পৌনে ১০টার দিকে পাওনা টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে সুইটি খাতুনকে ধুনট পৌরসভার পশ্চিমভরনশাহী অফিসারপাড়া এলাকার নিজ বাসায় ডেকে নেন শিক্ষক আশাদুল ইসলাম। এরপর কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে শিক্ষক আশাদুল ইসলাম, প্রতিবেশি আরেক শিক্ষক মিজানুর রহমান ও শিক্ষক শাপলা খাতুনসহ ৫ জন ব্যক্তি গেটের দরজা বন্ধ করে গৃহবধু সুইটি খাতুনকে পিটিয়ে ও গলাটিপে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

এঘটনায় গৃহবধু সুইটি খাতুন বাদী হয়ে ঝিনাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিজানুর রহমান, বড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আশাদুল ইসলাম, জোড়শিমুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা তানজিলা আক্তার শাপলা, জমির মালিক হাফিজুর রহমান সহ ৫ জনকে আসামী করে ধুনট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

তবে এবিষয়ে জমির ক্রেতা শিক্ষক আশাদুল ইসলাম বলেন, জমিটি বন্ধক রাখার বিষয়টি আগে জানা ছিল না। বন্ধকের টাকা জমি বিক্রেতার পরিশোধ করার কথা। কিন্তু বুধবার এবিষয়ে কথা বলার জন্যই সুইটি খাতুন বাসায় এসেছিলেন, কিন্তু তাকে কোন মারধর করা হয়নি।

এবিষয়ে ধুনট থানার এসআই শহিদুল ইসলাম জানান, পাওয়া টাকা নিয়ে গৃহবধুকে নির্যাতনের অভিযোগটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।