বগুড়ায় হাইব্রিড মরিচ চাষে ঝুঁকছেন কৃষক
ভালো দাম এবং বেশি ফলন পাওয়ায় চলতি মৌসুমে বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বিভিন্ন জাতের উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের মরিচ চাষ করেছেন কৃষকেরা। গতকাল চৌকিবাড়ী গ্রামের এক কৃষককে তার মরিচ ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। -অনুসন্ধানবার্তা

ইমরান হোসেন ইমন, অনুসন্ধানবার্তা:
মরিচ চাষের জন্য উপযোগি বগুড়া জেলার মাটি। এই জেলার প্রায় প্রত্যেকটি উপজেলাতেই কমবেশি মরিচ চাষ হয়ে থাকে। এই অঞ্চলের মরিচ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাহিদাও মিটিয়ে থাকে। মরিচ উৎপাদকারী উপজেলার মধ্যে ধুনট উপজেলা অন্যতম।

ভালো দাম এবং বেশি ফলন পাওয়ায় চলতি মৌসুমে ধুনট উপজেলায় বিভিন্ন জাতের উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের মরিচ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন কৃষকেরা। এই উপজেলার পৌরসভা এবং ১০টি ইউনিয়নেই কম-বেশি মরিচ চাষ করা হয়েছে।

গতকাল চৌকিবাড়ী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সোহেল রানা নামে এক কৃষক তার ৯ শতক জমিতে রোপনকৃত মরিচ গাছের আগাছা দমনে ব্যস্ত রয়েছেন। এসময় কথা হয় তার সঙ্গে।

তিনি জানান, মরিচ চাষে ব্যায়ের চেয়ে পরিশ্রম বেশি হয়। তাই অনেক কৃষকই মরিচ চাষ করতে চান না। তবে একটু পরিশ্রম করলে অল্প জমিতে এবং অল্প পুজিতে মরিচ চাষ করে অধিকতর লাভবান হওয়া যায়।

মরিচ চাষি সোহেল রানা জানান, গত একমাস আগে বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলার একটি নার্সারী থেকে কারিশমা জাতের ১ হাজার ৭০০ পিস মরিচ গাছ ২ হাজার ১০০ টাকায় কিনে জমিতে রোপন করেছেন। এখন গাছে ফুল ও ফল ধরছে। উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড কারিশমা জাতের এই মরিচ গাছ সারা বছরই চাষ করা যায়। এর গাছ অনেক ঝোপালো হয়। এই জাতের মরিচ সাধারণত রোপনের ৬০ দিনের মধ্যে তোলা যায়। প্রতি ১০-১৫ দিন অন্তর মরিচ সংগ্রহ করা যায়। প্রতিটি মরিচের দৈর্ঘ্য ১০-১১ সেমি হয়ে থাকে এবং এটি ছাদ বাগান বা বাড়ির অঙ্গিনাতেও লাগানোর জন্য উপযুক্ত।

তবে শুধু সোহেল রানাই নয়, তার মতো অনেক কৃষকই এখন হাইব্রিড মরিচ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। হাইব্রিড জাতের মধ্যে কারিশমা ও কিং জাতের মরিচের অধিকতর ফলন হওয়ায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই অঞ্চলের কৃষকদের কাছে।

গোপালনগর ইউনিয়নের খাটিয়ামারী গ্রামের কৃষক আজিজার রহমান জানান, পনেরো দিন আগে ২০ শতক জমিতে কিং জাতের মরিচ গাছ রোপন করেছেন। বাজারে চাহিদা থাকায় এবছর ভালো দামের আশা করছেন তিনি।

চৌকিবাড়ী ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রুবেল আহম্মেদ জানান, এই ইউনিয়নে প্রায় ৮ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ করা হয়েছে। দেশি মরিচের পাশাপাশি হাইব্রিড কারিশমা ও কিং জাতের মরিচ বেশি চাষ করেছে কৃষকেরা। মরিচের রোগ বালাইয়ের মধ্যে পাতা কোকড়ানো রোগটাই একটু বেশি হয়ে থাকে। তাই মরিচের রোগাবালাই প্রতিরোধে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এবং ক্ষেত পরিদর্শন করা হচ্ছে।