নিজস্ব প্রতিবেদক, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ার শেরপুর পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মর্তুজা কাউসার অভি (৩৮) হত্যার ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৩০) সেপ্টেম্বর কাজিপুরের নাটুয়ারপাড়া চর এলাকা সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- শেরপুর শহরের নয়াপাড়া এলাকার মৃত জিল্লুর রহমানের ছেলে শেরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুর রহমান শুভ (৩৫), খানপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রঞ্জুর ছেলে হিমেল (৩২) ও উলিপুর গ্রামের মৃত আলতাব হোসেনের ছেলে শেরপুর পৌর যুবলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক এনামুল মুসলিমিন সোহাগ (৩৫)।
মামলাসূত্রে জানাগেছে, শেরপুরের খন্দকারপাড়া এলাকার মৃত হোসেন কাউসার ফুয়াদের ছেলে শরপুর পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মর্তুজা কাউসার অভির সঙ্গে ঠিকাদারি ও হাটের ইজারা ব্যবসা নিয়ে মামলায় অভিযুক্তদের পূর্ব বিরোধ ছিল।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে অভি যখন প্রাইভেট কার মেরামতের জন্য উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন মোজাহিদ মোটর গ্যারেজে যান। তখন অভিকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ হিমেল তাকে ডেকে গ্যারেজের দক্ষিণ পাশের ফাঁকা বাগানে নিয়ে যান।
আরো পড়ুন- শেরপুরে আ’লীগ নেতাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা
এ সময় শরীফ নামের এক যুবক সাধারণ লোকজনকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যান। এই সুযোগে আগে থেকেই ওত পেতে থাকা মামলার অন্য অভিযুক্তরা এসে অভির হাত-পা, মুখসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অভিকে মৃত ঘোষণা করেন।
দলীয়সূত্রে জানাযায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগ নেতা অভি ও যুবলীগ নেতা সোহাগের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এই দ্বন্দ্বের জেরে সম্প্রতি অভি যুবলীগ নেতা সোহাগ ওরফে চাকু সোহাগকে মারপিট ও ছুরিকাঘাত করে। এনিয়ে তাদের মধ্যে দলীয় কোন্দল তৈরি হয়। আর এই ঘটনার জের ধরেই অভিকে হত্যা করা হয়েছে।
মামলার বাদী নিহতের স্ত্রী খাদিজা আক্তার লিমা বলেন, আমার স্বামীর হত্যাকারীরা খুবই প্রভাবশালী। ঘটনার পর থেকেই তাদের নামে মামলা না করার জন্য নানাভাবে আমাকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছিল। আমি সেসব বাধা উপেক্ষা করে আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার স্বামীর খুনিরা যত বড়ই প্রভাবশালী হোক না কেন, আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। ন্যায়বিচার পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সহযোগিতার জন্য আকুল আবেদন করেন তিনি।
এবিষয়ে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতাউর রহমান খন্দকার বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় মামলা নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে মামলার এজাহার নামীয় অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া মামলার অন্য আসামীদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ঘটনার সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে রয়েছে। তাই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ও পরিকল্পনাকারী প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনা হবে।