কাজিপুরে জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল খনন করেও সফলতা মিলছে না

শাহজাহান আলী, কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:

সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে চলতি বছর জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল খনন করেও একটি ব্রীজে পানি নিষ্কাশনে বাধার কারণে শতভাগ পানি অপসারন না হওয়ায় কাঙ্খিত সফলতা মিলছে না।

এতে করে অনেক জমি এখনও পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। ভুক্তভোগি কৃষক সমাজ শতভাগ জলাবদ্ধতা দূরীকরনে পানি নিষ্কাশনে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কাজিপুর কৃষি অফিসসুত্রে জানা গেছে, গত ২০০৩-২০০৪ অর্থবছরে যমুনা নদীর ভাঙ্গন থেকে কাজিপুর উপজেলা রক্ষায় বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধ নির্মান করা হয়। এ কারণে গান্ধাইল ইউনিয়নের বাঐখোলা নামক স্থানে বানিয়াযান খালের মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উজান থেকে নেমে আসা খালের পানি প্রবাহ স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

সেই থেকে অদ্যবদি উজান থেকে বানিয়াযান খাল দিয়ে পানি আসলেও নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় ১ যুগ ধরে কাজিপুর উপজেলার বিলে অঞ্চলের ৬টি ইউনিয়নের ৪১০ হেক্টর জমি জলাবদ্ধতায় পরিনত হয়ে যায়।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর যাবৎ ফসলি জমি শুধুমাত্র ইরি-বোরো মৌসুম ছাড়া আর কোন ফসল উৎপাদন করা করা সম্ভব হচ্ছিল না। বছর সাতেক আগে এ বিষয়ে সংবাদপত্রে ‘কাজিপুরে ৪শ হেক্টর জমি জলাবদ্ধতা‘ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে।

ঐ সময় প্রয়াত সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সাবেক পৌর মেয়র মধু তালুকদার ও গান্ধাইল ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বিষয়টি সমাধানের জন্য ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিলেও গান্ধাইল ইউনিয়নের মিরারপাড়ার কতিপয় গ্রামবাসির বাধার মুখে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা তৈরিতে ব্যর্থ হন।

অবশেষে গত ২০২০ সালে কাজিপুর থেকে নির্বাচিত সাংসদ তানভীর শাকিল জয়ের নির্দেশনায় কাজিপুর উপজেলা চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান সিরাজীর হস্তক্ষেপে চলতি ২০২০/২১ অর্থবছরে পানাসী প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে বানিয়াযান খালটির কাজিপুরের বিল অঞ্চলের পৌরসভা, গান্ধাইল ও চালিতাডাঙ্গা ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৩ কিঃ মিঃ এলাকায় খনন কাজ সম্পন্ন করে।

চলতি বছর গান্ধাইল, চালিতা ডাঙ্গা ও পৌরসভার ইতিপূর্বে জলাবদ্ধ হয়ে থাকা জমির অর্ধেক চাষাবাদের আওতায় আসলেও মিরারপাড়া নামক স্থানে ১৯৯৯ সালে নির্মিত একটি ব্রীজের কারণে পানি প্রবাহে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগি গান্ধাইলের বোরইতলা গ্রামের কৃষক আজিমুদ্দিন জানান, দীর্ঘ ১১ বছর পর, এই বার প্রথম ৩ বিঘা জমিতে রোপা-আমন ধান লাগাতে পারলাম। তবে এখনও ৩ বিঘা জমি পানির নিচেই রয়েছে।

এবিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান সিরাজী জানান, তিনি এবং ইউএনও সাহেব বিষয়টি সরেজমিন দেখেছেন। শুষ্ক মৌসুমে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।