মিছিলে ফুঁসে উঠেছে বগুড়ার গাবতলীর কালাইহাটা গ্রামের মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, অনুসন্ধানবার্তা, বগুড়া
কান্নার রোল এখনও কমেনি, স্বজন হারানোর বেদনা, আর মামলা আতঙ্কে দিন-রাত কাটছে বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলার কালাইহাটা গ্রামের মানুষদের। গত ৫ জানুয়ারী বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বালিয়াদিঘী ইউনিয়নের কালাইহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর সাথে সংর্ঘষের সময় বিজিবির গুলিতে ৪ জন মারা যায়। ওই ঘটনায় প্রিজাইডিং কর্মকর্তা জাকির হোসেন অজ্ঞাতনামা ৩শ জনকে আসামী করে গাবতলী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন এবং পুলিশের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, ওই ভোট কেন্দ্রের সামনে পুলিশ টহল ভ্যান। যুবক-তরুন এবং অধিকাংশ গ্রেফতার আতঙ্কে ভয়ে গ্রাম ছাড়া। পুলিশের টহল চলছে। বয়স্করা এখনও বাজারে, চা, দোকানে এবং গ্রামের মোড়ে আঙ্গিনায়, সেদিনের ঘটনা নিয়ে আলোচনা এবং মামলায় কারা আসামী হলো এ নিয়ে কথোপকথন চলছিল।

সবারই চোখে মুখেই ছিল আতঙ্কের ছাপ। অপরিচিত কেউ গেলেই নিজেদের আলোচনা বন্ধ করে নে তারা। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের বাড়ীর লোকজনের মুখও গম্ভীর। লোকজন গেলেই হাউমাউ করে কেঁদে উঠছে স্বজনরা। তবে যারা মারা গেছেন তারা সবাই নিীরীহ। প্রকৃতির মানুষ। অনেকেই জানালো, কালাইহাটা বাজার এবং ওই গ্রামের আনন্দ বাজারে রাত একটা পর্যন্ত লোকজন থাকলেও এখন রাত ৮টার পর জনশুন্য হয়ে পড়ে এলাকা।

মৃতদের স্বজনরা যা বলছে:
মৃত কুলসুমের ১২ বছররের ছেলে আকিব জানায়, বাবার আরেক স্ত্রী এবং সন্তান আছে। আমি এখন কি করবো। মাতো গুলিতে মারা গেল। আমার মার কি অপরাধ ছিল ? উপজেলা চেয়ারম্যান ৫০ হাজার টাকা দিয়েছে। ইউএনও, ওসি কেউ আসলো না।

গুলিতে মারা যাওয়া আলমগীরের স্ত্রী হোসনে আরা জানান, সংসারের আয় করার তিনিই ছিলেন। একমাত্র কন্যা আঙ্গুরী ৬ষ্ট শ্রেনীত পড়ে। আমি কি খাবো, মেয়েকে কিভাবে পড়ালেখা করাবো। উনার ক্ষোভ প্রশাসনের কেউ খোঁজ নিতে এলো না। তাহলে আমরাও কি অপরাধী?

গুলিতে নিহত আব্দুল রশীদের স্ত্রী বুলবুলি খাতুন বলেন, আমরা দিন এনে দিন খাই। সংসার চালাতো যে, সে মারা গেল। দুই ছেলে এবং এক মেয়েকে নিয়ে এখন কোথায় দাঁড়াবো?

নিহত ৭০ বছরের খোরশেদ আকন্দের ছেলে এরশাদ জানান, ভয় হয়। কেউ গুলিতে মারা গেলে সেখানে প্রসাশনের লোক আসে শান্তনা দেয়, সহযোগীতা করে। কিন্তু কেউ আসলো না। তাহলে আমরা কি অপরাধী?