ধুনটে অস্ত্রের মহড়ায় স্কুল মাঠে অবৈধ মেলা, আতঙ্কে এলাকাবাসী

স্টাফ রিপোর্টার, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় অস্ত্রের মহড়া প্রদর্শন করে ভান্ডারবাড়ী ছালেহা জহুরা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে অবৈধভাবে মেলা লাগানো হয়েছে। ২৫ এপ্রিল থেকে ৫দিন ব্যাপি এই মেলার আয়োজন করা হয়। এদিকে মেলা বসানোকে কেন্দ্র করে বিরোধীদের পিটিয়ে আহত এবং রীতিমতো অস্ত্র প্রর্দশন করায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। তারা এই মেলা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

এরআগে অস্ত্র হাতে নিয়ে মেলার প্রচারণা চালানোর সময় মেলা বিরোধী দুইজনকে পিটিয়ে আহত করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এঘটনায় গত সোমবার (২৪ এপ্রিল) হারান নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ৯ জনের বিরুদ্ধে ধুনট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

জানাগেছে, ২৫ এপ্রিল থেকে ৫দিন ব্যাপি ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ছালেহা জহুরা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে অবৈধভাবে মেলার নামে জুয়া বসাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের বিরোধ চলে আসছিল। এদিকে স্কুল মাঠে মেলা ও জুয়া বসানোর প্রতিবাদ করায় রঘুনাথপুর গ্রামের হীরা সহ প্রতিবাদি যুবকদেরকে ফেসবুকে পোস্ট করে দেশীয় অস্ত্র হাতে নিয়ে প্রকাশ্যে হুমকি দেয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য রাকিব রায়হান, নাহিদ ও স্বাধীন। এঘটনায় গত ১৩ এপ্রিল জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ধুনট থানায় জিডি করেন অবৈধ এই মেলার বিরোধীতাকারী যুবক হীরা। এবিষয়ে সম্প্রতি দেশের কয়েকটি স্থানীয়, জাতীয় ও অনলাইন পত্রিকায় কিশোর গ্যাংদের কার্যক্রমের একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।

তবে মেলা নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটলেও ভান্ডারবাড়ী ছালেহা জহুরা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ২৫ এপ্রিল থেকে ৫দিন ব্যাপি মেলার আয়োজন করে কিশোর গ্যাং। এরআগে গত সোমবার রাতে অস্ত্র হাতে নিয়ে মাইকিং করে মেলার প্রচারণাও চালায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। অস্ত্র হাতে প্রচারণা চালানোর সময় রাস্তায় মেলা বিরোধী ২ জনকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য কাইয়ুম, স্বাধীন, রায়হান ও সাব্বীরসহ ৯ জন। তাদের হামলায় আহতরা হলো- ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত ওসমানের ছেলে পলাশ ও রকি।
ধুনটে মেলাকে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় ২ জন আহত

এদিকে স্কুল মাঠে অস্ত্রের মহড়ায় অবৈধভাবে মেলা চললেও প্রশাসনের নীরব ভূমিকা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সাধারণ মানুষের মাঝে। এই মেলা নিয়ে যেন কোন সময় সংঘর্ষের আশংঙ্কাও করছে এলাকাবাসী।

ভান্ডারবাড়ী গ্রামের কৃষক আজিজার রহমান জানান, এই মেলার প্রধান আকর্ষন জুয়া ও হাউজি খেলা। তাই এলাকার অনেকেই মেলার বিপক্ষে রয়েছে। কিন্তু তারপরও তারা ক্ষমতার জোরে স্কুল মাঠে মেলা লাগিয়েছে।

এবিষয়ে ভান্ডারবাড়ী ছালেহা জহুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী বলেন, স্কুল প্রাঙ্গনে মেলা লাগানোর জন্য আমাদের কাছ থেকে কোন অনুমতি নেয়া হয়নি। কিছু যুবক এসে দপ্তরির কাছ থেকে চাবি নিয়ে গেইটের তালা খুলে সেখানে মেলা বসিয়েছে।

এবিষয়ে মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি গোসাইবাড়ি ডিগ্রী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বজলুর রহমান বলেন, স্থানীয় যুব সমাজের উদ্যোগে মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তবে অনুমোদনের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।

তবে এবিষয়ে ধুনট থানার ওসি রবিউল ইসলাম বলেন, কিশোর গ্যাংদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া মেলাকে কেন্দ্র করে মারপিটের বিষয়টিও তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাছাড়া স্কুল মাঠে মেলার কোন অনুমোদন আছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হবে।